বর্তমান যুগে স্মার্টফোন আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন আমরা সহজেই যোগাযোগ করতে পারি, তেমনি অপরদিকে এর অতিরিক্ত ব্যবহার আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার মানুষের শারীরিক সমস্যা, বিশেষ করে চোখ, ঘাড়, পিঠের যন্ত্রণা সৃষ্টি করছে। দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রীনে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের পাতলা পর্দা শুকিয়ে যায়, যা চোখের সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
তবে, শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, স্মার্টফোনের অত্যধিক ব্যবহারের ফলে মানসিক সমস্যাও বাড়ছে। বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়ায় অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা, মানসিক চাপ এবং উদ্বেগের সৃষ্টি করছে। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশি সময় কাটান, তারা বেশি বিষণ্নতা এবং উদ্বেগের শিকার হন। এছাড়া, স্মার্টফোনে বেশি সময় কাটানোর কারণে ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, রাতের বেলা স্ক্রীন দেখার কারণে মস্তিষ্কে 'মেলাটোনিন' নামক একটি হরমোনের প্রভাব পড়ে, যা ঘুমের জন্য প্রয়োজনীয়। এতে রাতের ঘুমের মান কমে যায়।
এছাড়া, দীর্ঘ সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে পিঠে এবং ঘাড়ে ব্যথা হওয়ার ঝুঁকি থাকে। একে 'টেক্সট নেক' বা 'ল্যাপটপ পিঠ' বলা হয়, যা বর্তমানে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দেন, দিনে কিছু সময় বিরতি নেওয়া এবং শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে শরীরকে সতেজ রাখা।
স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় সীমিত করে, সকালের বা রাতে কিছু সময় স্ক্রীন থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে পারেন। এছাড়া, স্মার্টফোনের জন্য একটিভিটি ট্র্যাকার অ্যাপ ব্যবহার করে সময় ব্যয় নির্ধারণ করা যেতে পারে। এটি অতিরিক্ত ব্যবহার রোধ করতে সহায়ক হতে পারে।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন নিশ্চিত করতে স্মার্টফোনের ব্যবহারের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।