প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৮
বাংলাদেশে তিন ধরণের শেখ মুজিবের পরিচয় ব্যাখ্যা করেছেন ড. মির্জা গালিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক। তিনি সামাজিক মাধ্যমে বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে একটি পোস্টে মন্তব্য করেছেন, যেখানে স্বাধীনতা, স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের প্রসঙ্গে শেখ মুজিবের তিনটি দিক তুলে ধরেছেন।
ড. মির্জা গালিবের প্রথম ব্যাখ্যা অনুযায়ী, মুক্তিযুদ্ধের নায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের নেতা ও রাষ্ট্রের স্থপতি ছিলেন। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার ভূমিকা অপরিসীম এবং তিনি জাতির প্রেরণার উৎস ছিলেন।
দ্বিতীয় জন শেখ মুজিব একনায়ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যে সময়ে রক্ষীবাহিনী গঠন করে বিচার বহির্ভুত হত্যাকাণ্ড চালানো হয় এবং গণতন্ত্র হত্যা করে একদলীয় বাকশাল ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ড. গালিবের ভাষায়, এই সময়টি দেশের জন্য একটি রাজনৈতিক ট্রাজেডি হিসেবে বিবেচিত।
তৃতীয় জন তিনি ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিব হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বর্তমান সরকারের সময়ে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশীয় কিছু প্রতিষ্ঠান এবং চেতনা ইন্ডাস্ট্রির মাধ্যমে শেখ মুজিবের মূর্তিকে ফ্যাসিবাদী রূপ দেওয়া হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচারী জুলুমতন্ত্রের কারণে মুজিবের চেতনা বিকৃত হয়েছে এবং জনতার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
ড. গালিব বলেন, আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র জনতা ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের মূর্তি ভাঙছে এবং এটি সঠিক রাজনৈতিক কর্তব্য হিসেবে গণ্য করা উচিত। তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, গণতন্ত্রকামী মানুষের জন্য এই আন্দোলন দেশের রাজনৈতিক চেতনা পুনরুজ্জীবিত করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
তিনি তার পোস্টে জনগণকে সচেতন থাকতে এবং শেখ মুজিবের প্রকৃত চেতনা ও স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসকে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে, বর্তমান সময়ে শেখ মুজিবের মূর্তি ও রাজনৈতিক চেতনার বিকৃতি থেকে দেশের যুব সমাজকে সচেতন করা গুরুত্বপূর্ণ।
ড. মির্জা গালিবের বিশ্লেষণ সামাজিক ও রাজনৈতিক বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে। তার বক্তব্যগুলো রাজনৈতিক ইতিহাস ও বর্তমান সরকারের নীতি সম্বন্ধে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করছে। দেশীয় জনমত ও শিক্ষাবিদদের মধ্যে এই বিষয় নিয়ে সমালোচনা ও আলোচনা তীব্র হচ্ছে।
পোস্টটি বাংলাদেশে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ইতিহাসবিদদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও মতামতের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শেখ মুজিবের প্রকৃত ইতিহাস ও বর্তমান রাজনৈতিক চেতনার মধ্যে পার্থক্য তুলে ধরাই ড. মির্জা গালিবের মূল বক্তব্য।