প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৫, ৯:৪৫
কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৪ সেন্টিমিটার ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে নীলফামারীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে এবং মানুষজন বন্যার ভয় নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম জানান, পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নদীর পানি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাগড়িবাড়ী, খালিশা চাপানি, পূর্ব ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, ঝুনাগাছ চাপানী, গড়াবাড়ী এবং জলঢাকার গোলমুন্ডা, শেলাইমারী ও কৈইমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। স্থানীয়রা গবাদিপশু ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র উঁচু স্থানে সরিয়ে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান জানান, চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ কয়েকটি চর এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে এবং অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। ফলে কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নদীর পানি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকায় আশেপাশের গ্রামের মানুষজন আতঙ্কিত।
লালমনিরহাটের হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলাতেও তিস্তার পানি বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে। নদীবেষ্টিত চর ও গ্রামগুলোতে হাঁটুসমান পানি উঠেছে। মানুষজন নিজেদের ও গবাদিপশুকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও বুধবার সকাল থেকে তা ৪–৭ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে এবং মধ্যরাতে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পায়। পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ব্যারাজের সব জলকপাট খোলা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অবিলম্বে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মানুষকে সতর্ক থাকার জন্য জানানো হয়েছে এবং ফসলি জমি, গবাদিপশু ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি এখনও প্রায় নিয়ন্ত্রণের বাইরে এবং নাগরিকদের সচেতন থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।