সামনের নির্বাচন সহজ হবে না , সতর্কবার্তা তারেক রহমানের

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ১৯শে জানুয়ারী ২০২৫ ০৭:২৫ অপরাহ্ন
সামনের নির্বাচন সহজ হবে না , সতর্কবার্তা তারেক রহমানের

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি রাজধানীতে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত একটি আলোচনা সভায় ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করেছেন। তার বক্তব্যে তিনি দলীয় ঐক্য, জনগণের পাশে থাকার এবং সামনের নির্বাচনে সচেতনভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।


তারেক রহমান সভায় বলেন, “আমাদের সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে। সামনের নির্বাচন সহজ হবে না। জনগণ আমাদের শক্তি। আমরা যদি ভুল করি, জনগণ আবার দেখিয়ে দিবে। সেই সময় আমাদের পস্তাতে হবে।” তিনি আরো বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের একটি বিষয় মনে রাখতে হবে যে, জনগণই শেষ বিচারের ভূমিকা রাখবে, এবং যদি তারা নিজেদের কাজ সঠিকভাবে না করতে পারে, তাহলে জনগণ তাদের কঠিন ফলাফল শিখিয়ে দেবে।  


তারেক রহমান দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, “আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং জনগণের পাশে থাকতে হবে।” তিনি দৃঢ়ভাবে মনে করেন যে, দলীয় কাজ এবং আন্দোলনে সফলতা পেতে হলে জনগণের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করতে হবে এবং সেই উদ্দেশ্যে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। 


একই সাথে, তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে অন্যান্য দলের উপস্থিতির কথা উল্লেখ করেন। “বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, এবং তাদের প্রতিটির নিজস্ব মতবাদ ও আদর্শ আছে। তবে একটি ব্যাপারে আমাদের সকলকে এক জায়গায় আসা উচিত, সেটা হলো ভোটের অধিকার এবং জবাবদিহিতা,” মন্তব্য করেন তিনি। তারেক রহমান নিশ্চিত করেন যে, সঠিকভাবে জবাবদিহিতার মাধ্যমে দেশের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।  


তারেক রহমান আরো বলেন, “ভোটের অধিকার একমাত্র জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে, এবং সঠিক সময়ে ভোট হলে দেশের প্রতিটি স্তরে জনগণের দুঃখ দুর্দশা ও আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে।” তিনি জানান, গঠিত কোনো সরকার যদি জনগণের সাথে সম্পর্ক রেখে কাজ না করে, তবে সেক্ষেত্রে তাদের কাজের ফলাফল জনগণের পক্ষে থাকবে না।  


বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানোর জন্য, তিনি ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণের নিরাপত্তা ও সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সরকারকে জবাবদিহি করতে বাধ্য করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, “এভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের উচিত ভোটের অধিকারকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়া।”  


তবে, তিনি সতর্ক করেন যে, শুধুমাত্র জিয়াউর রহমানের আদর্শ অনুসরণ করলেই দলে সফলতা আসবে না। “শহীদ জিয়া যেভাবে জনগণের মাঝে নিজেকে তুলে ধরেছিলেন, আপনাদেরকে সেভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে,” মন্তব্য করেন তিনি। তারেক রহমান আরও বলেন, “একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপির সরকার গঠনের সম্ভাবনা অত্যন্ত বেশি। তবে যদি অন্য কোনো দল সরকার গঠন করে, সেটা দেশের জন্য ভালো হবে না।”


তারেক রহমানের মতে, দেশ এবং জাতির স্বার্থে বিএনপির সঠিক নেতৃত্ব অপরিহার্য। তিনি নেতাকর্মীদেরকে জনগণের পাশেই থাকার আহ্বান জানান এবং বলেন, “এটি সময় জনগণের কাছে দাঁড়ানোর এবং তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করার।” 


এছাড়া, তিনি দলের নেতাকর্মীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন যে, বিএনপি শুধুমাত্র নিজের আদর্শের জন্য সংগ্রাম করে, কোনো ব্যক্তিগত সুবিধা নেওয়ার জন্য নয়। তিনি উল্লেখ করেন, “যারা বিগত সময়ে দলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন করেছে, তাদেরকে বিএনপি কখনোই সুবিধা দিতে যাবে না।”


তারেক রহমান আরও জানান, বর্তমানে দেশে ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। তিনি দাবি করেন, “শুধুমাত্র জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।” তিনি আরো বলেন, “এমনকি যারা এসব নির্যাতন করেছে তাদেরকে দলের মধ্যে কোনো অবস্থান নিতে দেওয়া যাবে না।”


এখানে, তারেক রহমান বিএনপির নেতা কর্মীদের আত্মবিশ্বাসী হতে এবং তাদের কর্তব্য পালনে সৎ ও নিষ্ঠাবান থাকার উপদেশ দেন। তিনি বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের আদর্শকে ধরে রাখতে হলে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।” 


এছাড়া, তারেক রহমান দলের সকল নেতাকর্মীকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের উন্নতি এবং জনগণের সেবা করতে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি দৃঢ়ভাবে মনে করেন যে, বিএনপি আসলে জনগণের দল এবং তাদের সকল কার্যক্রম জনগণের জন্য। তার মতে, বিএনপি যদি জনগণের পাশে না থাকে, তবে দলের একমাত্র অস্তিত্বই থাকবে না। 


এদিন, তারেক রহমান নেতাকর্মীদের লক্ষ্য রাখতে বলেন যে, আগামী নির্বাচনে দলকে শক্তিশালীভাবে প্রতিস্থাপন করতে হলে তাদের যথাযথভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে এবং জনগণের সমর্থন অর্জন করতে হবে।