আদানি চুক্তি নিয়ে , রয়টার্সকে যা বললেন জ্বালানি উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার ২রা ডিসেম্বর ২০২৪ ০৪:৩০ অপরাহ্ন
আদানি চুক্তি নিয়ে , রয়টার্সকে যা বললেন জ্বালানি উপদেষ্টা

ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে। চুক্তিতে দেশের স্বার্থবিরোধী বিভিন্ন শর্তের অভিযোগ উঠেছে। এসব শর্ত দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের জন্য আর্থিকভাবে বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।  


চুক্তির বিভিন্ন অসঙ্গতি এবং আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ বাংলাদেশে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। রোববার (১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, "চুক্তিতে অসঙ্গতি থাকলে আমরা আদানি গ্রুপের সঙ্গে পুনরায় আলোচনা করব। তবে দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে চুক্তি বাতিল হতে পারে।"  


উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কেনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার এই চুক্তি করে। কিন্তু এতে এমন শর্ত রয়েছে, যার ফলে বাংলাদেশকে ২৫ বছরে প্রায় ৩ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হতে পারে।  


বিদ্যুৎ উপদেষ্টা জানান, "ভারতে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি করছাড় পেলেও বাংলাদেশ কোনো সুবিধা পাচ্ছে না। বিষয়টি আদানি গ্রুপকে জানানো হয়েছে।"  


তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশের চাহিদা মেটাতে অভ্যন্তরীণ সক্ষমতা যথেষ্ট। গ্যাস সংকটসহ কিছু বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে নেই। আদানি যখন সরবরাহ অর্ধেক কমিয়ে দিয়েছিল, তখনও বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়েনি। আমরা কোনো বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীকে ব্ল্যাকমেইল করতে দেব না।"  


এই চুক্তি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, এতে বাংলাদেশের আর্থিক স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে। তদন্ত কমিটি চুক্তির শর্ত এবং আদানি গ্রুপের কার্যক্রম খতিয়ে দেখছে।  


অন্যদিকে, আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতির অভিযোগ চুক্তিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না বলে মনে করেন বিদ্যুৎ উপদেষ্টা। তবে চুক্তি পুনর্বিবেচনার বিষয়টি বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।  


বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে প্রতিবছর ৩২০ বিলিয়ন টাকা ভর্তুকি দিতে হয়, যা জনসাধারণের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চুক্তির অর্থনৈতিক ভারসাম্য নিশ্চিত করা এবং বৈদেশিক অংশীদারদের সঙ্গে ন্যায্য শর্তে আলোচনা করা এখন সময়ের দাবি।