প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে বরিশাল

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: সোমবার ১১ই এপ্রিল ২০২২ ০৫:৫১ অপরাহ্ন
প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে বরিশাল

চৈত্রের চতুর্থ সপ্তাহও শেষের পথে। বরিশালের কোথাও এক ফোঁটা বৃষ্টি নেই। ফলে খরতাপ পুঞ্জীভূত হয়ে সৃষ্টি করেছে তাপপ্রবাহ। সেই তাপে পুড়ছে পুরো বরিশাল। বিশেষ করে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া শ্রমিকরা পড়ছে বেকায়দায়। আবহাওয়া অফিস বলেছে, মৃদু থেকে মাঝারি মাত্রার তাপপ্রবাহ চলছে। আরও দুই-তিন দিন এই ধারা চলতে পারে। তারপর বৃষ্টি হতে পারে।


গত কয়েকদিনের প্রচন্ড তাপদাহে বরিশালে জনজীবন বিপর্যস্ত ও দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। তীব্র গরমে পুড়ছে জনপদ, মাঠ-ঘাট। কোথাও স্বস্তির বাতাস নেই। সর্বত্র গরম আর গরম, কখনও প্রচন্ড, আবার কখনও ভ্যাপসা গরম। প্রচন্ড গরমের মধ্যেও থেমে নেই শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রাম। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে প্রচন্ড গরম আটকাতে পারেনি শ্রমজীবীদের। ভোর হতেই তারা ছুটে চলেন রোজগারের সন্ধানে। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে যাত্রী পরিবহন করছেন রিকশা চালকরা। তৃষ্ণা মেটাতে রাস্তার পাশে ফুটপাতের শরবতই তাদের ভরসা। কেউবা আবার একটু প্রশান্তির আশায় গাছের নিচে বিশ্রাম নেন। এদিকে প্রচন্ড গরমের কারণে যেখানে সেখানে পানি পান করে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া। বরিশাল জেনারেল হাসপাতাল ও শেবাচিম হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ড কানায় কানায় পূর্ণ। চিকিৎসকরা এ সময়টাতে পরিমিত খাবারের পাশাপাশি খোলা স্থানের খাবার খেতে বারণ করছেন। পাশাপাশি প্রচুর পরিমানে পানি পান করার পরামর্শ দেন তারা।


এদিকে প্রচন্ড তাপদাহের কারণে দুপুর ১২টার পরপরই রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা হয়ে যায়। ব্যস্ততম সড়ক যানবাহন শূন্য হয়ে পড়ে। একারণে ব্যবসা বাণিজ্যও মন্দা যাচ্ছে। এবারের চৈত্র সংক্রান্তির কোন প্রস্তুতি নেই ব্যবসায়ীদের মাঝে। করোনা কারণে গত দুই বছর ঈদ বাজার তেমন জমে ওঠেনি। অবশ্য ব্যবসায়ীরা আশা করছেন বৈশাখের পয়লা সপ্তাহে জমতে পারে ঈদ বাজার।


আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, বৃষ্টিহীন চৈত্রের চলমান তাপমাত্রা এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে গড়ে প্রায় পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। গত এক সপ্তাহে বরিশালের তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠানামা করলেও তা অনুভূত হয়েছে প্রায় ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনের ও রাতের তাপমাত্রার মধ্যেও ব্যবধান কম। এটা এই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার তুলনায় তিন-চার ডিগ্রি বেশি। ফলে চৈত্র মাস আক্ষরিক অর্থেই কাঠফাটা হয়ে উঠেছে।