ছাত্রীর শিশু সন্তান কোলে নিয়ে ক্লাস নিলেন শিক্ষক!

নিজস্ব প্রতিবেদক
ইনিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার ৩রা অক্টোবর ২০২১ ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
ছাত্রীর শিশু সন্তান কোলে নিয়ে ক্লাস নিলেন শিক্ষক!

মহামারী করোনাকালীন স্কুল বন্ধ থাকায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটে। এমনই এক স্কুলছাত্রী তার সন্তান নিয়ে স্কুলে আসায় সেই ছাত্রী যেন পড়ালেখায় উৎসাহ না হারায় এজন্য ওই ছাত্রীর সন্তানকে কোলে নিয়েই ক্লাস করান শিক্ষক। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এধরণের একটি ছবি পোস্ট হওয়ার সাথে সাথেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। অধিকাংশ নেটিজেনরা এ ঘটনায় শিক্ষকের প্রশংসা করলেও ওই স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে হওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের কড়া সমালোচনা করেছেন অনেকে।


ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক পঙ্কজ কান্তি মুঠোফোনে জানান, ‘মেয়েটি পড়াশুনা থেকে যেন উৎসাহ হারিয়ে না ফেলে সে কারণে আমি তার সন্তানকে কোলে নিয়ে পড়িয়েছি। আমি চাই মেয়েটি পড়াশুনা চালিয়ে যাক। শিশুটিকে আদর করতে গিয়েই আমি কোলে নিয়ে ক্লাস চালিয়ে গেছি।’


বিষয়টি নিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন ইমরুল হাসনাত চৌধুরী সৈকত। রবিবার দুপুরে দেওয়া ওই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্রীর সন্তান কোলে নিয়ে শ্রেণি কার্যক্রম চালাচ্ছেন চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষক পঙ্কজ মধু স্যার। সন্তান কোলে নিয়ে পাঠে মনযোগী হতে না পারা শিক্ষার্থীর সুবিধার্থে তিনি এ কাজ করেছেন। স্যারের প্রতি শ্রদ্ধা, ভক্তি, ভালোবাসা।’


তিনি আরো লিখেছেন, ‘কিন্তু, আমাদের গ্রামসহ পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলোতে এখনো পুরোপুরিভাবে বাল্য বিয়ে রোধ সম্ভব হচ্ছে না। এর পুরোপুরি দায় নিতে হবে ইউনিয়ন পরিষদ অর্থাৎ মেম্বার চেয়ারম্যানের, পরিষদে কর্মরত উদ্যোক্তা, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে। নিকাহ রেজিস্ট্রারও এর দায় এড়াতে পারে না। দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া শিক্ষার্থী নিশ্চয় ১৮ বছর কিংবা ততোর্ধ্ব না।’


এ লেখাটি অনেকে কপি করে বিভিন্ন গ্রুপ ও নিজেদের আইডিতে দিয়েছেন। সেখানে অনেকেই শিক্ষকের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি বাল্য বিয়ে নিয়ে সমালোচনা করেছেন। রৌণক রুবেল নামে একজন লিখেছেন, ‘স্যারের প্রতি আরো রেস্পেক্ট বেড়ে গেলো। তার প্রতি শ্রদ্ধা ও সালাম। তবে এর চেয়েও অসংগতি এবং দুখের বিষয় হলো দশম শ্রেণির ছাত্রীর বাচ্চাসহ ক্লান করা। ... শ্রদ্ধেয় শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ আমরা প্রত্যেকেই এগিয়ে আসলেই এই বাল্যবিবাহ নামক মারাত্মক ব্যাধি এবং অন্যায় প্রতিরোধ সম্ভব।’


মুক্তি খান নামে একজন লিখেছেন, ‘এর দায়ভার নিতে হবে ইউনিয়ন পরিষদকে। এদের সঠিক তদন্ত করা উচিত।’