প্রকাশ: ২৬ জুন ২০২৫, ১১:২৮
সাবেক তিন নির্বাচন কমিশনারসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বিএনপির দায়ের করা মামলায় নতুন করে রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সংযুক্ত হয়েছে। বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শেরেবাংলা নগর থানার উপপরিদর্শক শামসুজ্জোহা সরকার আদালতে আবেদন করলে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মিনহাজুর রহমান তা অনুমোদন দেন। ফলে মামলাটির গুরুত্ব ও রাজনৈতিক জটিলতা আরও বাড়লো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহল।
মামলায় নতুনভাবে যুক্ত হওয়া ধারাগুলোর মধ্যে রয়েছে দণ্ডবিধির ১২০ (ক), ৪২০ ও ৪০৬ ধারা। এগুলোর আওতায় রাষ্ট্রদ্রোহী তৎপরতা, প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ড ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে বিচার প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া যাবে। ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগ থেকে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিএনপির দাবি, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন সংবিধান লঙ্ঘন করে দলীয় সরকারের পক্ষে কাজ করেছে এবং জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে।
মামলায় ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের তৎকালীন তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনার যথাক্রমে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, এ কে এম নূরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়ালকে মূল আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া তখনকার পাঁচজন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শকসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরও আসামির তালিকায় রাখা হয়েছে। বিএনপির অভিযোগ, এসব কর্মকর্তা ভোটে সরাসরি হস্তক্ষেপ, গায়েবী মামলা, গুম-খুন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে একতরফা নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, এই তিনটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীদের বিরুদ্ধে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন ও গণগ্রেপ্তার চালানো হয়েছে যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। এমনকি সাধারণ ভোটারদেরও কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এতে যে ভোট হয়েছে তা প্রকৃত জনগণের মতামত নয় বরং একটি সাজানো নাটকের অংশ, যা পুরো নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
এছাড়াও মামলায় দাবি করা হয়েছে, অনেক ভোটারই ভোট দিতে পারেননি এবং প্রিজাইডিং অফিসার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের অনেকেই এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও সাক্ষী। ব্যালট পেপারের সিল ও স্বাক্ষর বিশ্লেষণ করে প্রকৃত ভোটারদের শনাক্ত করা সম্ভব বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে আদালতে দাবি করা হয়েছে, এসব কর্মকাণ্ড সংবিধান ও আইন পরিপন্থী এবং তা রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ও গণতন্ত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেছে যে তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।