বিশ্বের দূষিত শহরগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা আজ শুক্রবার অষ্টম স্থানে রয়েছে। সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের实时 (লাইভ) বায়ুর মান পর্যবেক্ষণ সূচক অনুযায়ী, ঢাকার বায়ুর মান আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে, যেখানে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (AQI) স্কোর ছিল ১৪১।
আজকের তালিকায় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বাতাসের শহর হিসেবে শীর্ষে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর, যার একিউআই স্কোর ২৩৭। এটি ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে। তালিকায় এরপর রয়েছে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুন, নেপালের কাঠমান্ডু এবং ভিয়েতনামের হ্যানয়, যেগুলোর বায়ুমানও ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকার বায়ুমান
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় বাতাসের মান আজ ‘অস্বাস্থ্যকর’ থেকে ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ের মধ্যে রয়েছে।
সাভারের হেয়ায়েতপুর: একিউআই স্কোর ২১৬ (খুবই অস্বাস্থ্যকর)
ইস্টার্ন হাউজিং: একিউআই স্কোর ১৭৬ (অস্বাস্থ্যকর)
গোড়ান: একিউআই স্কোর ১৬২ (অস্বাস্থ্যকর)
ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এলাকা: একিউআই স্কোর ১৬০ (অস্বাস্থ্যকর)
কল্যাণপুর: একিউআই স্কোর ১৪৯ (অস্বাস্থ্যকর)
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মাত্রার দূষিত বাতাস স্বাভাবিক মানুষের জন্যই ক্ষতিকর, বিশেষত শিশু, বয়স্ক এবং শ্বাসকষ্টে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের জন্য এটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
বায়ুমান নির্ধারণের সূচক
আইকিউএয়ারের মানদণ্ড অনুযায়ী, একিউআই স্কোরের ভিত্তিতে বায়ুর মানের বিভিন্ন স্তর নির্ধারণ করা হয়:
০-৫০: বায়ু ভালো
৫১-১০০: মাঝারি বা সহনীয়
১০১-১৫০: সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর
১৫১-২০০: সাধারণ মানুষের জন্য অস্বাস্থ্যকর
২০১-৩০০: খুবই অস্বাস্থ্যকর
৩০১-এর বেশি: দুর্যোগপূর্ণ
বায়ুদূষণের কারণ ও প্রতিকার
ঢাকার বায়ুদূষণের অন্যতম কারণ হচ্ছে নির্মাণকাজ, ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া এবং শিল্পকারখানার নির্গমন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুষ্ক মৌসুমে বাতাসে ধুলার পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় বায়ুর মান আরও খারাপ হয়।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন:
মুখে মাস্ক ব্যবহার করা
সকাল ও সন্ধ্যায় খোলা জায়গায় চলাফেরা কমানো
বাসার জানালা বন্ধ রাখা
শিশু, বয়স্ক এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ
সরকারের উদ্যোগ প্রয়োজন
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নির্মাণকাজে ধুলা নিয়ন্ত্রণ, যানবাহনের ধোঁয়া কমানো এবং শিল্পকারখানার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে বায়ুদূষণের কারণে দীর্ঘমেয়াদে জনস্বাস্থ্য সংকট দেখা দিতে পারে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।