দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাতপাখা'ই ভরসা রোগীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক
শফিউল আলম রাজীব, জেলা প্রতিনিধি কুমিল্লা
প্রকাশিত: শনিবার ৬ই মে ২০২৩ ০৯:০৮ অপরাহ্ন
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাতপাখা'ই ভরসা রোগীদের

কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেহাল অবস্থা। নারী ও শিশু ওয়ার্ড'কে গোডাউন বানিয়ে বৈদ্যুতিক পাখা'র ব্যাবস্থা না রেখেই বারান্দায় সিট পেতে ভর্তি রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তীব্র গরমে হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে আসা ভর্তি রোগীদের পরতে হচ্ছে বিপাকে, হাপাখাই যেনো তাদের একমাত্র ভরসা।


শনিবার দুপুরে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশের নারী ও শিশু ওয়ার্ডটিকে মালামাল রাখার গোডাউন তৈরী করে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তৃতীয় তলার পুরুষ ওয়ার্ডে নারী রোগীদের স্থানান্তর করা হয়েছে। ফলে তৃতীয় তলার সামনের বারান্দায় দীর্ঘ প্রায় ৩ মাস যাবৎ পুরুষ রোগীদের সিট পেতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে এই তীব্র গরমে সেখানে বৈদ্যুতিক পাখা'র ব্যাবস্থা না থাকায় সেবা নিতে আসা রোগীরা আরো বেশী অসুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরছেন। 


হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভর্তিকৃত একাধিক রোগী ও তাদের স্বজনেরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালে সুস্থ হতে চিকিৎসা নিতে এসে মনেহয় আরো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি।  একে তো নোংড়া পরিবেশ তারওপর বৈদ্যুতিক পাখা’র অভাবে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কেউ কেউ বাড়ি থেকে নিজস্ব ফ্যান এনে একটু স্বস্তি খুঁজছেন। টয়লেটে পাওয়া যাচ্ছেনা সময়মত পানি, পানি পাওয়া গেলেও টয়লেটের ভাঙ্গা দরজার সামনে কাপড় দিয়ে ইজ্জত রক্ষা করে চলতে হচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে এমন বেহাল অবস্থা বাইরে থেকে যা বুঝার মতো নয়।


হাসপাতালে নেই পরিকল্পিত লাইটিং ব্যাবস্থা  রাতের অন্ধকারে হাসপাতালে ঢুকে নিচতলা থেকে উপর তলায় উঠতে রোগী ও স্বজনদের বাড়ি থেকে বাতি নিয়ে আসতে হয়। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসায় একটি মুক্তিযুদ্ধা কেবিন রাখা হলেও কেবিনটিরও বেহাল অবস্থা লক্ষ করা যায়। 


হাসপাতালের বহিঃ বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সাথে কথা বলে জানাযায় তাদেরও রয়েছে নানান ধরনের অভিযোগ। দালাল চক্রে অতিষ্ঠ হয়ে পরেছে হাসপাতালে আগত রোগীরা, কম সময়ে ডাক্তার দেখিয়ে দিবে আস্বাসে টেনে হিচরে নিয়ে চলে তাদের। কোনো কোনো রোগীরা ডাক্তার দেখাতে পারলেও পাচ্ছেনা পর্যাপ্ত ঔষধপত্র, এক ঘন্টার মধ্যেই ফুরিয়ে যায় কিছু কিছু ঔষধপত্র, তবে তা কোথায় যাচ্ছে তার খোজ রাখেনা কেউ। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন নজরধারী নেই বল্লেই চলে।


এবিষয়ে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হাসান বলেন, আমাদের হাসপাতালের উন্নয়নে কাজ চলছে।  তাই টেম্পোরারি তৃতীয় তলার বারন্দায় পুরুষ রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। ঠিকাদার নিয়োগে দেরি হওয়ায় সময় একটু বেশি লাগছে, কিছুদিনের মধ্যেই সকল সমস্যার সমাধান হবে। দালালের বিষয়টি উপজেলা পরিষদের মিটিংয়ে উত্থাপন করেছি, আমরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মিলে দালাল নির্মূলে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।