সরাইল উপজেলায় এখন গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। বহু এলাকায় দিনের বেলায় চুলাতে গ্যাস থাকছে না। ফলে বাসায় রান্না করতে পারছেন না উপজেলার বহু লোকজন। বেশিরভাগ সময় বাইরে থেকে খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে তাদের।
জানা গেছে, সরাইল উপজেলার খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে তাদের। নিত্য প্রয়োজনীয় এই কাজের জন্য কেউ বা খুঁজে নিয়েছেন বিকল্প ব্যবস্থা।
সরেজমিনে জানাযায়, সরাইল কুট্রাপাড়া, উচালিয়াপাড়া, বড় দেওয়ান পাড়া, হাবলি পাড়া, নিজ সরাইল, বড্ডাপাড়া, সৈয়দ টুলা, এলাকায় গ্যাস সংকট সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকার লোকজন রান্নার জন্য বিকল্প উপায় খুঁজে নিয়েছেন বা হোটেল থেকে তৈরি খাবার কিনে আনছেন।
উচালিয়াপাড়র বাসিন্দা গৃহিণী রাবেয়া বললেন, গ্যাস নিয়ে বলার কিছু নেই। গ্যাস সকাল ৬টায় যায়, দুপুর ২টায় আসে। এই এলাকায় গ্যাসের অবস্থা শোচনীয়। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে একটি সিলিন্ডার কিনেছেন তিনি। এতে বাড়তি খরচ হচ্ছে, পরিবারের মাসিক বাজেট কাটছাঁট করতে হচ্ছে।
অভিযোগ করেন নিয়মিত গ্যাস না পেয়েও গ্যাস বিল দিতে হচ্ছে।নতুন করে গ্যাসের মাথা পরিবর্তন করেছি, তাও কোন কাজে আসে নাই।তার দুটি বাচ্চা নিয়ে শীতে ব্যাপক সমস্যায় আছেন বলে উল্লেখ করেন এ গৃহিণী। কারণ হিসেবে তিনি বললেন, প্রচণ্ড শীত। তাদের জন্য পানি গরম করতে হয়। অথচ গ্যাস থাকছে না। এখন যেন সব সমস্যা হচ্ছে গ্যাসের সংকটে।
উপজেলার বড় দেওয়ানপাড়া এলাকার বাসিন্দা প্রবাসী মো. নোমান ঠাকুর বলেন, তাদের এলাকায় গত দুই-তিন মাস ধরে সকালে ব্যাপক গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। সকালবেলা গ্যাসের গতি কম থাকে। তাই নিরুপায় হয়ে রাতের বেলায় রান্নার কাজ শেষ করে রাখতে হয়। আবার গ্যাস সেলিন্ডার কিনতে হয়েছে।
বড্ডাপাড়া- হাবলিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই এলাকায় সকাল ৭টার আগেই গ্যাসে চলে যায়। আবার দুপুর ২টার পরে আসে। এর ফলে তাদের রান্না-বান্নায় ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
রফিকুল ইসলাম নামের এক বাসিন্দা বলেন, বাচ্চাদের জন্য বাইর থেকে খাবার কিনে আনতে হচ্ছে। শুধু উচালিয়াপাড়া, বড় দেওয়ানপাড়া বা কুট্রাপাড়া ও নিজ সরাইল নয়, উপজেলাজুড়ে গ্যাসের সংকট প্রকট হয়ে দাঁড়িয়েছে। শীত জেঁকে বসতে না বসতেই উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় গ্যাস সংকটে সমস্যা হচ্ছে নিত্যদিনের রান্নায়। অধিকাংশ এলাকায় সকাল থেকে বিকেল অবধি গ্যাসের চাপ নেই বললেই চলে। ফলে বাধ্য হয়ে রাতে অথবা কাকডাকা ভোরে দিনের রান্নার কাজ শেষ করতে হচ্ছে গৃহিণীদের।
বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংকট নতুন কিছু নয়। তবে আগে ছিল শুধু শীতকালে, এখন সারা বছর। গ্যাসের দাম চলতি বছর দেড় গুণ বাড়লেও গৃহিণীদের দুর্ভোগ কমেনি বরং বেড়েছে।অনেকেই বলছেন, তারা বড় বিপাকে আছেন। কারণ বাখরাবাদের গ্যাস না পেলেও প্রতি মাসে তাদের বিল গুনতে হচ্ছে।
এ ব্যপারে জানতে চাওয়া হলে গ্যাস সংকটের কথা স্বীকার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি উপ-মহা ব্যবস্থাপক বিক্রয় ডিপার্টমেন্ট প্রকৌশলী মো. আখতারুজ্জামান এ প্রতিনিধিকে বলেন, গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় অনেক এলাকায় গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। শীতকালে গ্যাস সরবরাহ এমনিতেই কম হয়, এছাড়াও বিভিন্ন সমস্যার কারণে গ্রাহকরা গ্যাস কম পাচ্ছেন। আমরা এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।