কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে প্রতি বছর আগুনে পুড়ে বিপুল পরিমাণ সম্পদের ক্ষতি হয়। কয়েকদিন পরপরই শোনা যায় আগুন লেগে ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও গবাদিপশু পুড়ে গেছে। চলতি মাসেই ভূরুঙ্গামারীতে তিনটি ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুনের কবল থেকে মানুষের জানমাল বাঁচাতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন জরুরি হলেও ভূরুঙ্গামারীতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নেই।
জানাগেছে, ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আয়তন প্রায় ২৩৬ বর্গকিলোমিটার। এখানে ২ লাখ ৩১ হাজার ৫৩৮ জন মানুষ বাস করে। উপজেলায় মোট ৫৭ হাজার ৫টি পরিবার রয়েছে। উপজেলা সদরের সবচেয়ে কাছের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি প্রায় ১৫ কিঃমিঃ দূরে পাশ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলায় অবস্থিত। আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা সেখান থেকে ঘটনাস্থলে পৌছানের আগেই সবকিছু আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
গত ৩ অক্টোবর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামে একটি ঘরে আগুন লাগলে পাশ্ববর্তী নাগেশ্বরী উপজেলার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে খবর দেয়া হয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে পৌছানের আগেই এলাকাবাসী আগুন নেভায়। তবে ততক্ষণে পাঁচটি ঘর আগুনে পুড়ে যায়। ঘরগুলোতে পাঁচটি দরিদ্র পরিবার বাস করতো। এতে তারা নিঃস্ব হয়ে যায়।
গত ১৭ অক্টোবর চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ভাওয়ালগুড়ি গ্রামে একটি গরুর খামারে আগুন লাগে। স্থানীয়দের চেষ্টায় খামারের আগুন নেভানো সম্ভব হলেও খামারে থাকা ফ্রিজিয়ান জাতে তিনটি গাভী আগুনে পুড়ে মারা যায়। অপর একটি গাভী মারাত্মক ভাবে পুড়ে যায়।
এঘটনায় খামারির প্রায় দশ লাখ টাকা ক্ষতি হয়। গত ২১ অক্টোবর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের মানিককাজী গ্রামে একটি বাড়িতে আগুন লাগে। নগদ তিন লাখ টাকা, সোনার গহনা সহ বাড়ির সবকিছু আগুনে পুড়ে যায়। এতে আনুমানিক সাত লাখ টাকা ক্ষতি হয়। অপরদিকে গত বছরের ২৭ অক্টোবর রাতে পাইকেরছড়া ইউনিয়নের গছিডাঙ্গা কুড়ার পাড় এলাকায় আগুন লেগে এগারোটি দোকান পুড়ে প্রায় ৬০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছিল।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানাযায়, গত বছর আগুনে পুড়ে ক্ষতির শিকার হওয়া ৬২টি পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।
চলতি বছরের এখন পর্যন্ত ৫৬টি পরিবারকে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও স্থানীয়রা বলেন, একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থাকলে আগুন লাগার ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ কমানো যেতো। অনেকদিন ধরেই শুনছি ভূরুঙ্গামারীতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত তা নির্মিত হয়নি। আর কত ঘরবাড়ি ও সম্পদ আগুনে পুড়লে তারপর ভূরুঙ্গামারীতে একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন হবে?
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কুড়িগ্রামের উপসহকারী পরিচালক আলী আকবর বলেন, ভূরুঙ্গামারী ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণের জমি নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। জটিলতা নিরসনের কাজ চলমান রয়েছে।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দীপক কুমার দেব শর্মা বলেনে, ভূরুঙ্গামারীতে ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জন্য এক একর জমি নির্বাচন করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট একটি প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।