মোংলায় সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: বুধবার ২৭শে এপ্রিল ২০২২ ০৬:০০ অপরাহ্ন
মোংলায় সুপেয় পানির জন্য হাহাকার

উপকূলীয় উপজেলা মোংলার পৌরশহর ও গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে হাহাকার অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের পৌরসভায় পানি শোধন ও সরবরাহ কেন্দ্রের পুকুরের পানি তলানিতে ঠেকেছে। গ্রামাঞ্চলের পুকুরগুলোও প্রায় শুকিয়ে গেছে। বৃষ্টির দেখা নেই। এ অবস্থায় সুপেয় পানির চরম সংকট দেখা দিয়েছে। পানির অভাবে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে এ এলাকার কয়েক লাখ অধিবাসী। পৌরবাসীর অভিযোগ, সঠিক নিয়মে পুকুর খনন না করা, সময় মতো নদী থেকে পানি উত্তোলন না করাসহ নানা সমস্যার কারণে শহর এলাকায় বিশুদ্ধ পানির এই সংকট সৃষ্টি হয়েছে।


২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর পানি সরবরাহের দায়িত্ব পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে। তারপর থেকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পৌর এলাকার প্রায় ৩ হাজার পরিবারকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সকালে ও বিকেলে সুপেয় পানি সরবরাহ করে আসছে। চলতি  মাস থেকে পুকুরের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এ সরবরাহ একেবারেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। পৌর পানি শোধনাগার কেন্দ্রে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কেন্দ্রের বিশাল পুকুরটির তলানিতে সামান্য পানি আছে।


এদিকে পৌর এলাকায় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের একটি পুকুরে সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পানি নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে নারী-পুরুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা সারি বেঁধে দাঁড়িয়ে এক কলস করে পানি সংগ্রহ করেন। কিন্তু সেই পানিও শেষের দিকে। এ ছাড়া পৌর এলাকার হাতেগোনা গুটিকয়েক পুকুরের পানিও শুকিয়ে গেছে। এসব পুকুর থেকে পৌরবাসী নিজস্ব উদ্যোগে কিছুটা হলেও সুপেয় পানি সংগ্রহ করতো। অপরদিকে পৌর এলাকার ব্যক্তি মালিকানাধীন অধিকাংশ পুকুর গত কয়েক বছরে বালি দিয়ে ভরাট করে ফেলায় সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।


পৌর শহরের বালুর মাঠ এলাকার গৃহবধূ কোহিনুর আক্তার ও ফাতেমা বেগম বলেন, পৌরসভার পক্ষ থেকে কিছু এলাকায় ওপেন ট্যাপ দেওয়া হয়েছে। তা থেকে পানি আনতে লাইনে দাঁড়াতে হয়।


মোংলা পোর্ট পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবদুর রহমান জানান, মোংলা বন্দর ও শিল্পাঞ্চলে মানুষের  ব্যাপক কর্মসংস্থানের ফলে গ্রাম থেকে মানুষ পৌর এলাকায় এসে নতুন নতুন বসতিস্থাপন করছে তাই চাহিদানুসারে পানি সরবরাহ করা যাচ্ছেনা। পৌরবাসীর পানির চাহিদা মিঠাতে একটি নতুন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রকল্পটি অনুমোদন ও বাস্তবায়ন হলে সুপেয় পানির চাহিদা অনেকটা পুরণ করা সম্ভব হবে।