বরিশাল সব পথ বন্ধ, ভোগান্তি ॥ ভ্যান-রিক্সাই ভরসা

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: শনিবার ৫ই নভেম্বর ২০২২ ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
বরিশাল সব পথ বন্ধ, ভোগান্তি ॥ ভ্যান-রিক্সাই ভরসা

বরিশাল বিএনপির মহাসমাবেশের দুই দিন আগে থেকে বিভিন্ন দাবি আদায়ে ধর্মঘটের কারনে বরিশালে খেয়া পারাপারের ট্রলার, লঞ্চ, বাস, মাইক্রোবাস, মাহিন্দ্রা টেম্পু, সিএনজি চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো বিএনপির সমাবেশে আগত নেতাকর্মীদের সাথে সাধরণ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন।


তাই বাধ্য হয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যান, রিক্সা, অটোরিক্সা, বাইসাইকেলে, মোটরসাইকেল, ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে সড়ক মহাসড়ক হয়ে সাধারণ মানুষ গন্তব্যে যাচ্ছেন। অপরদিকে খেয়া পারাপারের নৌকা- ট্রলার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নদী পথে মানুষের ভোগান্তিও কম নয়। অনেকেই বাধ্য হয়ে জেলেদের নৌকায় নদী পাড়ি দিচ্ছেন। আর নদীবেস্টিত বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে আসা লোকজন ঝুঁকি নিয়ে বিশাল বিশাল নদী ট্রলার, বাল্কহেডে চরে পারি দিচ্ছেন।


যদিও নিয়মিতো গণপরিবহনগুলো বন্ধ থাকায় এসব যানবাহনের চালকদের বিরুদ্ধে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন যাত্রীরা। তারপরও গন্তব্যে পৌঁছানের জন্য এ যানবাহনই এখন ভরসা।


ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চালক মানিক বলেন,বাস চলাচল বন্ধ,সেইসাথে মহাসড়কে মাইক্রোবাস,মাহিন্দ্রা টেম্পুও চলছে না। এ অবস্থায় সল্প দুরত্বে যাওয়া মানুষরা ভ্যানেও যেতে চাচ্ছেন। তবে নথুল্লাবাদ ও রুপাতলী থেকে বিএনপির সমাবেশস্থলে মানুষ বেশি ভ্যানে যাচ্ছেন। কারণ এক ভ্যানে ৭/৮ জন যাওয়া যায় কিন্তু রিক্সায় তিনজনের বেশি নয়। রিজার্ভ নিলে যাত্রীদের লাভই বেশি হচ্ছে।


এই ভ্যানের যাত্রী কালাম বলেন, কর্মস্থলে যেতে হবে তাই বাসা থেকে বের হয়ে গড়িয়ার পার আসি কিন্তু বাস-মাহিন্দ্রা, সিএনজি কিছুই পাইনি। মোটরসাইকেলে নথুল্লাবাদ পর্যন্ত অনেক ভাড়া চাচ্ছিলো তাই ভ্যানে চেপেই চলে আসলাম।


অপর এক যাত্রী মরিয়ম বলেন, সমাবেশস্থলে আসার জন্য বাসা থেকে এতোটা পথ পায়ে হেটে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই গড়িয়ার পার থেকে বেশি ভাড়া দেয়ার শর্তে ভ্যানেই চেপে বসেছি। নগরীর বান্দরোড হয়ে যেতে চাইলেও সেখানে পুলিশের চেকপোষ্টে এতো লোক যেতে দিবে না একসাথে। তাই ঘুরিয়ে বাংলাবাজার সড়ক হয়ে যাচ্ছি।


 অপরদিকে বরিশাল নগরের ব্যাটারি চালিত রিক্সার চালক সোহাগ জানান, বাস ধর্মঘটের কারনে আজ ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক একেবারেই ফাঁকা। কিছু পন্যবাহি ট্রাক চলাচল করলেও বেশিরভাগ সড়কে প্যাডেল রিক্সা,হলুদ অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা ও ভ্যান চলাচল করছে। রিক্সাগুলো শহরের মধ্যে চলাচল করলেও বেশিরভাগ ভ্যান মহাসড়ক ধরে সল্প দূরত্বে যাত্রী আনা নেয়া করছে।


এদিকে ধর্মঘটের কারনে মহাসড়কগুলোতে প্রভাব থাকলেও বরিশাল শহরের মধ্যে তেমন প্রভাব দেখা যায়নি। আজও  সকাল থেকে শহরের রাস্তায় প্রচুর খালি রিক্সাও দেখা গেছে। তবে নগরের চৌমাথা, রুপাতলী, আমানতগঞ্জ, নাজিরের পুল থেকে শহরতলীতে যেতে রিক্সাসহ সব যানবাহনেই বেশি ভাড়া চাওয়ার অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।


এদিকে মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা মানুষজন পায়ে হেটেই যাতায়াত করছেন বলে জানিয়েছেন হলুদ অটোরিক্সা চালক কালাম। তিনি বলেন, শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন পায়ে হেটে বিএনপির সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে যাচ্ছেন। হাতে গোনা অল্প কিছু লোক রিক্সা-অটোরিক্সায় চড়ছেন। আর নৌ-পথে আসা যাত্রীরা নগরীর কেডিসি কলোনী ও চাঁদমারী এলাকায় নেমে পায়ে হেটেই সমাবেশস্থলে যাচ্ছেন।