মোগো সব শ্যাষ হইয়া গ্যাছে

নিজস্ব প্রতিবেদক
এইচ.এম.এ রাতুল, জেলা প্রতিনিধি, বরিশাল।
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ২রা সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৫:২৫ অপরাহ্ন
মোগো সব শ্যাষ হইয়া গ্যাছে

“সর্বনাইশ্যা আড়িয়াল খাঁ নদী মোগো ভিটামাটি সব খাইয়া হালাইছে, মোগো সব শ্যাষ হইয়া গ্যাছে। কেউ এহন পর্যন্ত মোগো দেখতে আহে নাই” কথাগুলো বলছিলেন, আড়িয়াল খাঁন নদীর কবলিত তিখাসার গ্রামের ভূক্তভোগী পরিবারের সদস্য। বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সদরে এসএসপি সার্কেল াফিস থেকে পূর্ব দিকে দিয়াসুর হাজী বাড়ি মোড় পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার নদীর ভাঙ্গনে বাড়ি ঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শংকায় রয়েছে প্রায় দু’শত পরিবার। 


সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বরিশালের গৌরনদী উপজেলার গৌরনদী বন্দরস্থ এসএসপি সার্কেল অফিসের সামনে থেকে দিয়াসুর হাজি বাড়ি মোড় পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার জায়গা ভাঙ্গন কবলিত হয়ে রাস্তাসহ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ইয়াসিন সরদারের বাড়ি থেকে হাজি বাড়ি মোড় পর্যন্ত সড়ক পথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। নদীর পাড়ের এ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হাজার হাজার মানুষকে। উপজেলার তিখাসার গ্রামের গ্রামের ইয়াসিন সরদার (৭৫), সবুজ সরদার (৩২)সহ স্থানীয় অনেকেই জানান, আড়িয়াল খা নদীর ভাঙ্গনে গ্রামের প্রায় দুই কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন। এ  গ্রামের ২০/২৫টি  পরিবারের বাড়ি ঘর সন্ধ্যা নদী গ্রাস করে নিয়েছে। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ভাঙ্গনকবলিত পরিবারগুলো। এছাড়া গ্রামের সোনামদ্দি সরদারের পারিবারিক গোরস্থানটি অতি সম্প্রতি নদী গ্রাস করেছে। 


গ্রামের সুরুজ হাওলঅদার (৩৩) অভিযোগ করে বলেন, ৫/৭ বছর ধরে ভাঙ্গন শুরু হয়। তখন থেকেই মোরা গ্রামবাসি ভাঙ্গনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করি কিন্তু কেউই মোগো খবর নেয়নি। প্রায় ১৫/২০টি পরিবার আজকে গৃহহীন হয়েছে। আরো ২শ পরিবার নিঃস্ব হওয়ার পথে। মারুফা বেগম (৫৫) বলেন, মোগো গরীব গো দেখার কেউ নোই। নদী মোগো সব গিইললা খাইতেছে কিন্ত দেহার কেহ নাই। দিনমজুর আফসের বয়াতি (৬৫) ও মফসের বয়াতি (৬০) বলেন, ভাংতে ভাংতে মোগো বসত ঘরের কাছাকাছি আইছে জরুরীভাবে ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা না নিলে মোগো বাড়ি ঘরও নদী গ্রাস করবো। মোরা ভিটাহারা হইয়া যামু।


এ প্রসঙ্গে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, নদী ভাঙগনের বিষয়টি আমার নখদর্পনে আসার পরে সোমবার আমি ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। প্রতিদিনই ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়ক নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাড়ের পরিবারগুলো চরম ঝুঁকিতে বসবাস করছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন  গৌরনদী পৌরসভার  ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ শাহিন গাজী কাউন্সিল সাবেক কাউন্সিলর রেজাউল করিম টিটু, ৫নং ওয়ার্ড অঅওয়ামীরীগের সভাপতি মোঃ আলাউদ্দীন, সাধারন সম্পাদক মোঃ ফাপরুক হাওলাদার, যুবলীগ নেতা  ফরহাদ হোসেন। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ মাহবুদুল কবির এ প্রসঙ্গে বলেন, আমরা ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রকল্প তৈরী করে তা অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষো ভাঙ্গন ঠেকাতে কাজ শুরু করা হবে।