করোনায় বাড়ছে আত্মহত্যার ঝুঁকি, তালিকায় বাংলাদেশও
মহামারি করোনাভাইরাসে আতঙ্কে থমকে আছে পুরো বিশ্ব। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের ভীতি থেকে আত্মহত্যার পরিমাণ বাড়ছে। এই তালিকায় ওপরের দিকে নাম আছে বাংলাদেশও। নেদারল্যান্ডসের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং চিকিৎসা বিষয়ক প্রকাশনী সংস্থা এলসিভিয়ারের পিয়ার রিভিউড জার্নাল ‘ব্রেইন, বিহেভিয়ার অ্যান্ড ইমিউনিটি’ এর ওপর একটি গবেষণা চালায়। তাদের গবেষনায় উঠে এসেছে।
গবেষকরা টি গবেষণা চালিয়েছে। এর উদ্দেশ্য ছিল এই আত্মহত্যার প্রবণতা কীভাবে ঠেকানো যায়। সংস্থাটি একটি গবেষণা বাংলাদেশ, ইতালি, ব্রিটেন, জার্মানি, সৌদি আরব এবং ভারতের ওপর চালিয়েছে। সামাজিক অসমতার সঙ্গে তাল মেলাতে না পারা এই আত্মহত্যার অন্যতম কারণ।
ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও কয়েকটি আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে। ‘ভলিউম ৫১, জুন ২০২০ সংখ্যায়’ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আত্মহত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনেক ধরনের বিশ্লেষণ দেয়া হয়েছে।
ভলিউম ৫১ সংখ্যায় বলা হয়েছে, ‘মানসিক দুর্ভোগ সহ্য করতে না পেরে যে ব্যক্তি জীবন বিসর্জন দেন, তাকে সাধারণত আত্মহত্যা বলা হয়। কভিড-১৯ ভীতি থেকে যে আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে, তা প্রতিরোধ করা সম্ভব।’
বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভেতর কভিড-১৯ সংক্রান্ত ভীতি আছে। তবে এটি কোন পর্যায়ে তা এখনো অজানা।’
বাংলাদেশের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের সূত্র উল্লেখ করে গবেষণায় ২৫ মার্চের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়, ‘৩৬ বছর বয়সী জাহিদুল ইসলাম ঢাকা থেকে রামচন্দ্রপুর গ্রামে ফিরে আত্মহত্যা করেন। কারণ প্রতিবেশীরা তাকে কভিড-১৯ সংক্রমিত সন্দেহ করেন। এরপর সামাজিকভাবে তাকে এড়িয়ে যাওয়া শুরু হলে গাছে ঝুলে আত্মহত্যা করেন। কিন্তু পরে দেখা যায় তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না।’
‘বাংলাদেশ, ভারতের মতো দক্ষিণ এশিয়ার দেশে গ্রামে বসবাস করা মানুষেরা শহুরেদের তুলনায় কম শিক্ষিত। যার কারণে তাদের ভেতর কভিড-১৯ ভীতি ছড়িয়ে পড়ছে। অন্য এলাকা থেকে আসা ব্যক্তিদের নিয়েও অহেতুক ভয় উচ্চমাত্রায় পৌঁছেছে। যেটি আত্মহত্যার অন্যতম কারণ।’
span style="font-size:large;">প্রথম দিকে বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাকে সামাজিকবাবে একটি হেয়প্রতিপন্ন করার অভিযোগ পাওযা গেছে। বাংলাদেশে আত্মহত্যার ক্ষেত্রে এটিই অন্যতম প্রধান কারণ বলেও গবেষণায় বলা হয়।
গবেষণকরা এর থেকে পরিত্রাণ পেতে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন। তাদের পরামর্শ:
* বিশ্বাসযোগ্য সোর্স ছাড়া কভিড-১৯ সংক্রমণের খবর সীমিত করা।
* সামাজিক দূরত্ব এবং আইসোলেশনের দিনগুলোতে সামাজিকভাবে যুক্ত থাকার ভিন্ন পথ বের করা।
* মানসিক সুস্থতা ঠিক রাখে এবং মন ফুরফুরে রাখে এমন কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকা।
* ভুক্তভোগী প্রিয়জনকে পর্যবেক্ষণে রাখা, যাতে তিনি লড়াইয়ের সময়ে নিঃসঙ্গ বোধ না করেন।
* বিশেষজ্ঞদের দিয়ে টেলি-কাউন্সেলিং বাড়ানো। চিকিৎসকদের বেশি বেশি রোগীদের সঙ্গে কথা বলা।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।