বাংলাদেশকে আরো ১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার সহায়তা যুক্তরাষ্ট্রের
যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে ১৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের বেশি (প্রায় ১৪৮ কোটি টাকা) অর্থ সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশে নভেল করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) মহামারি মোকাবেলায় প্রচেষ্টা ও মহামারি পরবর্তী উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির জন্য যুক্তরাষ্ট্র এ সহায়তা দিচ্ছে। বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার সোমবার এ সহায়তা ঘোষণা করেন।
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, এই সহায়তা বাংলাদেশকে বিগত ২০ বছরে দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ১০০ কোটি ডলারেরও বেশি স্বাস্থ্য সহায়তার অতিরিক্ত। নতুন করে এই সহায়তার মধ্যে ঢাকায় নিম্ন আয়ের মানুষ বসবাস করে এমন এলাকায় এক লাখ গরিব মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।
এছাড়াও বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি জোরদার করতে এবং কভিড-১৯ পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কর্মসূচির জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র তার আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির মাধ্যমেই বাংলাদেশে কভিড-১৯ মোকাবেলায় প্রায় তিন কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তা দিয়েছে।
নতুন নিয়োগ পাওয়া চিকিৎসকদের শেষ ব্যাচের জন্য ইউএসএআইডি ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত 'কভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ এবং রোগী ব্যবস্থাপনা' শীর্ষক দুদিনব্যাপী প্রশিক্ষণ সোমবার শুরু হয়েছে।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার বলেন, 'যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কভিড-১৯ মোকাবেলায় আর্থিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে পেরে গর্বিত। ইউএসএআইডির মাধ্যমে নতুন এই তহবিল দিয়ে ঢাকায় বসবাসরত অভাবী ও ক্ষুধার্ত হাজার হাজার মানুষের কাছে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা কভিড-১৯ এর প্রভাব মোকাবেলায় বাংলাদেশের চলমান প্রচেষ্টায় আরো একটি উপায়ে অংশীদার হলাম।'
যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস জানায়, কভিড-১৯ মোকাবেলায় সহযোগিতা ও মানবিক সহায়তা কর্মসূচির পাশাপাশি গত ৩ মে ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউন বাংলাদেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে ১৫ কোটি ৬০ লাখ ডলারের বেশি অর্থ সহায়তা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি সংশোধিত দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন। এই কার্যক্রমগুলো বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে ওঠা কভিড-১৯ এর প্রভাবসহ উন্নয়নের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলায় সহায়তা করবে এবং দুই দেশের শক্তিশালী অংশীদারির উদাহরণ হয়ে থাকবে।
সোমবারের অনুষ্ঠানে ইউএসএআইডি মিশন ডিরেক্টর ডেরিক ব্রাউন বলেন, 'ইউএসএআইডি বাংলাদেশের উন্নয়নে দীর্ঘদিনের সঙ্গী এ জন্য আমি গর্বিত। ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করতে ইউএসএআইডি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
অনুষ্ঠানে ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালের চিকিৎসক আয়েশা আনোয়ার শ্যামা, বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টার গ্রিড হাসপাতালের ডা. মোহাম্মদ আহসানুল কবির ইতিপূর্বে প্রশিক্ষণ নেওয়ার ফলে তাদের কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা বলেন, প্রশিক্ষণের ফলে তাদের হালকা, মাঝারি ও গুরুতর উপসর্গ থাকা রোগীদের চিকিৎসা দিতে সহজ হচ্ছে।
এছাড়া ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) ব্যবহারের বিষয়েও তারা জ্ঞান অর্জন করেছেন। এর ফলে তারা নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রোগিদের আরো ভালো চিকিৎসা সেবা দিতে পারছেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) ডাক্তার সানিয়া তাহমিনা, সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার অনিন্দ রহমান, ইউএসএআইডির জনসংখ্যা স্বাস্থ্য ও পুষ্টি বিভাগের পরিচালক জেরসেস সিধওয়া ও ডাক্তার রিয়াদ মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।