উচ্চ তাপমাত্রায় দীর্ঘ সময় টিকতে পারে করোনাভাইরাস
নতুন করোনাভাইরাস উচ্চ তাপমাত্রায়ও দীর্ঘ সময় ধরে টিকে থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের একদল বিজ্ঞানী। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট) তাপমাত্রায় এই ভাইরাসকে রেখেছিলেন তারা; এতে দেখা যায়, ভাইরাসটি সেখানেও পুনরুৎপাদন করতে সক্ষম।
ফ্রান্সের দক্ষিণাঞ্চলের অ্যাইক্স-মার্সেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রেমি চ্যারেল এবং তার সহকর্মীদের গবেষণায় নতুন এ তথ্য উঠে এসেছে। শনিবার বায়োআরএক্সআইভিডটওআরজির ওয়েবসাইটে নন-পিয়ার-রিভিউড গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভাইরাসটিকে পুরোপুরি মেরে ফেলার জন্য তাপমাত্রা প্রায় পুরোপুরি ফুটন্ত অবস্থায় নিতে হয়েছিল।
ফরাসী বিজ্ঞানীদের নতুন এই গবেষণা করোনাভাইরাস নিয়ে ল্যাবে কর্মরত টেকনিশিয়ানদের নিরাপত্তার বিষয়টিকে জটিলতায় ফেলছে। ভাইরাল কার্যক্রম পরীক্ষার জন্য আদর্শ মানসম্মত আফ্রিকান সবুজ বানরের কিডনি সেলে ভাইরাসটি সংক্রমিত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা। জার্মানির বার্লিনের একজন রোগীর শরীর থেকে ভাইরাসটির নমুনা নেয়া হয়েছিল।
ভিন্ন দুটি নোংরা এবং পরিষ্কার পরিবেশে পৃথক টিউবে প্রাণীর প্রোটিনসহ ভাইরাসটি রাখা হয়েছিল। পরিষ্কার পরিবেশে ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটিকে তাপ দেয়ার পর দেখা যায় ভাইরাস কম কার্যকর হয়েছে। কিন্তু নোংরা পরিবেশে রাখা ভাইরাসটি একই তাপমাত্রায় তখনও বেঁচে ছিল এবং পুনরুৎপাদন অব্যাহত রেখেছে।
গবেষকরা বলেছেন, এই তাপমাত্রায় ভাইরাসটি কম সংক্রামক হলেও বেঁচে থাকা অবশিষ্ট অংশ আবারও সংক্রমণ ঘটানোর জন্য কার্যকর থাকে।
বিশ্বজুড়ে নতুন এই করোনাভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু এই পরীক্ষা কার্যক্রমের অধিকাংশই সম্পন্ন হয়ে কম সুরক্ষিত ল্যাবে। ভাইরাসের নমুনার সঙ্গে ল্যাবের টেকনিশিয়ানরা সরাসরি সংস্পর্শে আসেন। গবেষকরা তাগিদ দিয়ে বলেছেন, ল্যাবে পরীক্ষার আগে ভাইরাসটিকে নিষ্ক্রিয় করা প্রয়োজন।
ইবোলা-সহ প্রাণঘাতী আরও বেশ কিছু ভাইরাসের গবেষণায় ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এক ঘণ্টায় মারা যায় কিনা সেটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছিল। তবে ফরাসী গবেষকরা বলেছেন, উচ্চ তাপমাত্রায় এই ভাইরাসটি মারা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাইরাসটিকে মাত্র ১৫ মিনিটে মেরে ফেলার জন্য সর্বোচ্চ ৯২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথমবারের মতো করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত হন দেশটির স্বাস্থ্যকর্মীরা। চীনে এখন পর্যন্ত এতে আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ২৪৯ এবং মারা গেছেন ৩ হাজার ৩৪১ জন।
চীনের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্বের ২২০টিরও বেশি দেশ এবং অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাসে মৃত্যুর সংখ্যা এখন ১ লাখ ২১ হাজার ছাড়িয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ। করোনায় এই মুহূর্তে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র; দেশটিতে ২৩ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাক ৮৭ হাজার ১৭৩ জন। সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।