যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলের একটি কারাগারে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলায় অন্তত ৬৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। রোববার (০১ সেপ্টেম্বর) ইয়েমেনের বিদ্রোহীগোষ্ঠী হুথির এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে। বিদ্রোহী গোষ্ঠী হুথির স্বাস্থ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইউসুফ আল-হাদরি বলেছেন, রোববার ইয়েমেনের ধামার শহরের একটি কারাগারে বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি ও আরব আমিরাত নেতৃত্বাধীন জোট। এতে কমপক্ষে ৬৩জন নিহত হয়েছেন।
হুথি পরিচালিত টেলিভিশন চ্যানেল আল-মাসিরাহকে তিনি বলেন, সৌদি জোটের বিমান হামলায় ওই কারাগারের অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। ধামার কমিউনিটি কলেজকে কারাগার হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এই কারাগারে ১৮৫ জন যুদ্ধবন্দী ছিলেন। এর আগে, টুইটারে এক বার্তায় হুথির মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুল সালাম বলেন, হামলায় ৫০ জন নিহত ও আরো শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত সামরিক জোটের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ধামারে হুথি বিদ্রোহীদের স্থাপনা লক্ষ্য করে বিমান হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। এতে হুথিদের মজুদকৃত ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস হয়েছে।
ধামার কারাগারে বন্দীরা মুক্তির অপেক্ষায় ছিলেন বলে হুথির অপর মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-বুখাইতি জানিয়েছেন। কারাবন্দীবিষয়ক হুথি জাতীয় কমিটির প্রধান আব্দুল কাদের আল-মুর্তজা বলেন, অনেক কারাবন্দীর ভাগ্যে কী ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। এখনো বোমা বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ওই এলাকায় উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা পৌঁছাতে পারছেন না।
স্থানীয় বাসিন্দারা ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ধামারে রাতভর অন্তত ছয়বার বিমান হামলা হয়েছে। এক বাসিন্দা বলেন, প্রচুর শক্তিশালী বিস্ফোরণ হয়েছে এবং পুরো শহর কেঁপে উঠেছে। সকালের আগে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনের শব্দ পাওয়া যায়নি। ২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলে নেয়ার পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে হুথি। তারপর থেকেই দেশের বাইরে তিনি।
হাদিকে ক্ষমতায় ফেরাতে ২০১৫ সালের জুনে ইয়েমেনে হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলা শুরু করে সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব সামরিক জোট। হুথি বিদ্রোহীদের দমনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় সৌদি ও আরব আমিরাত নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনে এখন পর্যন্ত অন্তত ১৮ হাজার বার বিমান হামলা পরিচালনা করেছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদসহ দেশটির আরো কয়েকটি শহরে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে হুথিরা। কয়েক বছর ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের অবসানে দেশটির বিদ্রোহীদের সঙ্গে রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতায় পৌঁছানোর চেষ্টা করছে জাতিসংঘ।
ইনিউজ ৭১/টি.টি. রাকিব
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।