লাদেনপুত্র হামজা 'নিহত'

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহঃস্পতিবার ১লা আগস্ট ২০১৯ ০২:১৫ অপরাহ্ন
লাদেনপুত্র হামজা 'নিহত'

আল-কায়েদার প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত উসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেন নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির তিন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বুধবার (৩১ জুলাই) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো এ খবর জানিয়েছে। তবে কখন, কোথায় কিংবা কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে, এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে বলতে পারেননি ওই তিন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী নেতা ও সাবেক আল-কায়েদা প্রধানের ছেলে হামজা বিন লাদেনকে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে। তবে, তা নিহত হওয়ার ঘটনায় আমেরিকা জড়িত থাকার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। এদিকে, লাদেনপুত্র নিহতের ঘটনার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ট ট্রাম্প বলেছেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাইনা।

চলতি বছরের ১ মার্চে সৌদি আরব তার নাগরিকত্ব বাতিল ঘোঘণা করে। তখন যেকোনো দেশে হামজার অবস্থান কিংবা শনাক্ত করা সম্ভব এমন তথ্য দিতে পারলে ১০ লাখ ডলারের পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছিল ওয়াশিংটন। ১১ সেপ্টেস্বর হামলার আগে ৩০ বছর বয়সী হামজা আফগানিস্তানে তার বাবার পাশে ছিলেন। পরবর্তী সময়ে আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের পরে পাকিস্তানেও তারা একসঙ্গে সময় কাটিয়েছেন। ১৯৮৯ সালে সম্ভত হামজা বিন লাদেন জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তার বাবা আফগানিস্তানে যান এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। আল-কায়েদার বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে বাবার পাশে হামজাকেও দেখা গেছে। ২০১১ সালে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে মার্কিন নেভি সিলের এক অভিযানে উসামা বিন লাদেন নিহত হন। যে কম্পাউন্ডে উসামা নিহত হন, সেখানে হামজাকে দেখা যায়নি।

২০১৭ সালে এক প্রবন্ধে সন্ত্রাসবাদবিরোধী বিশেষজ্ঞা ও যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সাবেক এজেন্ট আলি সওফান বলেন, বাবার প্রতিষ্ঠিত সংগঠনের নেতৃত্ব নিতে হামজা প্রস্তুত হচ্ছেন। ওসামার জীবিত তিন স্ত্রীর মধ্যে খাইরিয়া সাবারের গর্ভে জন্ম নিয়েছেন হামজা বিন লাদেন। গত আগস্টে ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলায় প্রধান ছিনতাইকারী মোহাম্মদ আত্তার মেয়েকে বিয়ে করেন। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রাণ হারায় দুই হাজার ৭৫৩ জন। শুধু প্রাণের হিসেবেই নয়, এই ঘটনায় পাল্টে যায় বিশ্ব রাজনীতির মানচিত্র। ঘটনার পরপরই সন্দেহের তীর আল-কায়দার ওপর গিয়ে পড়ে।

প্রাথমিকভাবে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার বিষয় অস্বীকার করলেও ২০০৪ সালে হামলার দায় স্বীকার করেন আল-কায়দা প্রধান উসামা। হামজা বিন লাদেন সবশেষ গত বছরে বিবৃতি দিয়েছিলেন। ওই বিবৃতে আরব উপদ্বীপের লোকজনের বিদ্রোহের আহ্বান জানিয়েছিলেন হামজা। এবং সৌদি আরবক রাজতন্ত্রকে উৎখাতের আহ্বান জানিয়েছিলেন হামজা। হামজা দীর্ঘদিন প্রকাশ্যে আল-কায়েদার অনুসারীদের যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইয়েল এবং ফ্রান্সে যুদ্দ পরিচালনার জন্য আহ্বান জানিয়েছিলেনন। হুমকি দেয়া হয়েছিল। দীর্ঘদিন আড়ালে থাকা ওসামা বিন লাদেনপুত্রের সবশেষ খবর এলো মারা যাওয়ার। তবে, তার মৃত্যুর খবর নিয়ে এখনো ধোয়াশা কাটেনি মধ্যপ্রাচ্যে।

ইনিউজ ৭১/এম.আর