প্রথম পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে। বিশ্বভ্রমণের শর্তেই ২০১৭ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন কলকাতার সল্টলেকের বাসিন্দা রথীন্দ্রনাথ দাস ও গীতাঞ্জলি দাস। সাধারণ দম্পতিদের মতো বাড়িতে থেকে সংসার করার ইচ্ছে ছিল না কোনওদিনই। বিয়ের পর থেকেই নবদম্পতি মোটরবাইকে বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণে। বন্যপ্রাণীদের বাঁচানোর বার্তা দিতে দেশের নানা প্রান্তে গিয়েছেন তঁারা। বিয়ের পর রথীন্দ্রনাথ স্ত্রীকে নিয়ে প্রথম যান রাজস্থান। এবার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে বাইকে করেই ভারত–সহ পাড়ি দেবেন ১৩টি দেশে। বাঘ বাঁচানোর বার্তা দিতে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য–সহ মায়ানমার, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, রাশিয়া–সহ আরও বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। এখনও পর্যন্ত ২৬০০ স্কুলে গিয়ে বন্যপ্রাণীদের বাঁচাতে শিবির করেছেন রথীন্দ্রনাথ। তবে এবারের সফর অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং বলে জানাচ্ছেন দু’জনেই। ৮০ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দেবেন বাইকে।
১৫ ফেব্রুয়ারি শুরু করেছেন যাত্রা। দক্ষিণবঙ্গ ভ্রমণ করে রবিবার এসে পৌঁছন শিলিগুড়ি। সোমবার থাকছেন এখানেই। মঙ্গলবার বক্সার উদ্দেশে রওনা দেবেন। সেখানে প্রচার শেষে দেশের বিভিন্ন রাজ্য ঘুরে ভিসা সংক্রান্ত কিছু কাজের জন্য কলকাতায় কয়েকদিন কাটাতে হবে। এরপর বিদেশের উদ্দেশে রওনা দেবেন। কোথাও জাহাজে বাইক নিয়ে পার হবেন সীমান্ত, আবার কোথাও বিমানে সওয়ার হবেন মোটরবাইক–সহ। জানা গেছে, দেড় বছরের এই ভ্রমণে খরচ পড়বে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। আর্থিক সহযোগিতার জন্য বন্ধু ও বেশকিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন রথীন্দ্রনাথ। পাশে পেয়েছেন একটি অটোমোবাইল সংস্থাকেও। তারাই এই সফরের জন্য ২০০ সিসির বাইকটি দিয়েছে। সেই বাইকের সামনে লেখা ‘জার্নি ফর টাইগার’।
এদিন শিলিগুড়িতে রথীন্দ্র বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই বন্যপ্রাণীদের প্রতি বিশেষ টান ছিল। তাদের বাঁচিয়ে রাখার বার্তা দিতে এর আগে ৩ বার দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বাইকে করে সচেতনতা প্রচার করেছি। একসময় অসমে একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থেকে বন্যপ্রাণ নিয়ে কাজও করেছি। এখন সফরের টানে কাজ ছেড়ে দিয়েছি। বিভিন্ন স্কুলে পড়ুয়াদের নিয়ে শিবির করেছি। ইচ্ছে ছিল স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার। সেই শর্তেই পরিচয় ও বিয়ে। তাই স্ত্রীও এবার আমার সঙ্গী।’অন্যদিকে স্ত্রী গীতাঞ্জলি দাস বলেন, ‘বিয়ের আগে কোনওদিন বাইকেও উঠিনি। তবে মনের মধ্যে অনেকদিনের গোপন ইচ্ছেটা ছিলই। স্বামীর প্রস্তাবে তাই না করতে পারিনি। সঙ্গে থাকতে পেরে ভাল লাগছে। রোজ প্রায় ১২ ঘণ্টা বাইকে থাকি। এভাবেই দু’জনে বাইকেই সংসার করছি। ইচ্ছে আছে, নিজেও একদিন এভাবেই বাইক চালাব।’
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।