প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৫, ২২:১১
পাকিস্তানে মৌসুমি বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ দুর্যোগ পরিস্থিতি। গত ৩৬ ঘণ্টার টানা বৃষ্টিপাত ও বন্যার প্রভাবে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩২ জন। দেশটির খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থার তথ্যমতে, নিহতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যকই শিশু, যারা ঘরবাড়ির ছাদ ও দেয়াল ধসে প্রাণ হারিয়েছে।
সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোর মধ্যে সোয়াত উপত্যকা অন্যতম, যেখানে একাই ১৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৫৬টি ঘরবাড়ি যার মধ্যে ৬টি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। খাইবার পাখতুনখোয়ার পাশাপাশি পাঞ্জাব প্রদেশেও একই ধরনের দুর্যোগ দেখা দিয়েছে যেখানে ভারি বৃষ্টিপাতে অন্তত ১৩ জন মারা গেছেন।
এখানেও বেশ কয়েকটি শিশু মারা যায় যখন তাদের ওপর ভেঙে পড়ে দেয়াল ও ছাদের অংশবিশেষ। পাকিস্তানের জাতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর পূর্বাভাসে বলেছে, আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে, ফলে আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি এখনও বিদ্যমান। দেশের দক্ষিণাঞ্চলেও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিরাজ করছে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে বলে জানিয়েছে সরকার।
এক মাস আগেও পাকিস্তানকে তীব্র ঝড় ও শিলাবৃষ্টির মুখোমুখি হতে হয়েছিল যেখানে একই সংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে পাকিস্তান বিগত কয়েক বছর ধরেই নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হয়ে আসছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং অনিয়মিত আবহাওয়ার কারণে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটি দিন দিন আরও বেশি দুর্যোগপ্রবণ হয়ে পড়ছে।
পাকিস্তানের ২৪ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার জন্য এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সংকটের আভাস দিচ্ছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং স্থানীয় উদ্যোগের সমন্বয় ছাড়া এই সংকট নিরসন কঠিন হবে বলেই মত পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু করা হলেও বাস্তব পরিস্থিতিতে তা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরাও।