প্রকাশ: ২৫ জুন ২০২৫, ১২:৯
ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে টানা ১২ দিনের সংঘাতের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছে তেহরান। ফার্স নিউজ এজেন্সির বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, সংঘাত চলাকালে ইসরায়েলের হয়ে কাজ করা ৭০০ জন ভাড়াটে এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী। ইরানের দাবি, এসব ব্যক্তি নাশকতা, গুপ্তচরবৃত্তি ও সাইবার হামলার মতো কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল এবং দেশজুড়ে তাদের নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করে ধরা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে জনসাধারণের রিপোর্ট, গোপন গোয়েন্দা তথ্য এবং ইরানের নিজস্ব নিরাপত্তা ইউনিটের তৎপরতার মাধ্যমে এজেন্টদের শনাক্ত করা হয়।
১৩ জুন ইসরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর অংশ হিসেবে ইরানে ড্রোন হামলা ও তথ্য সংগ্রহের যে কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছিল, তাতে এই এজেন্টরা সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখছিল বলে জানিয়েছে ইরান। মোসাদ নিজেই হামলার আগে গোপন এজেন্টদের তোলা ভিডিও ফুটেজ সরবরাহ করে এবং একাধিক গোপন ঘাঁটি থেকে ইরানের অভ্যন্তরে হামলার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে। ইরানের নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা শুধু বহিরাগত হুমকিই নয়, বরং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বড় সংকেত।
তেহরানে ইসরায়েলপন্থি মতামত সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করায় একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলছে, এসব কর্মকাণ্ড সমাজের মানসিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে এবং জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায়। এজন্য সম্প্রতি তেহরানের প্রসিকিউটর কার্যালয়ে একটি বিশেষ ইউনিট গঠন করা হয়েছে, যারা দেশের সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমগুলো পর্যবেক্ষণ করছে।
এদিকে ইরানের বিভিন্ন প্রদেশ যেমন কেরমানশাহ, ইসফাহান, খুজেস্তান, ফার্স ও লোরেস্তান থেকে ইসরায়েলি এজেন্টদের গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। রাজধানী তেহরান থেকেও বেশ কিছু গুপ্তচর আটক হয়েছে, তবে নির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো হয়নি। এ নিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সতর্ক অবস্থানে রয়েছে এবং অতিরিক্ত নজরদারি চলছে।
একাধিক ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সংঘাত শুরুর পর থেকে ধৃত বেশ কিছু ইসরায়েলি এজেন্টের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ইরান সরকার ও জনগণের মধ্যে নিরাপত্তা ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে আরও সংবেদনশীলতা তৈরি হয়েছে। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান গুপ্তচরযুদ্ধের নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা ঘটল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।