প্রকাশ: ২২ জুন ২০২৫, ১৮:২০
মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনার মধ্যে ইরান থেকে ইসরায়েলের দিকে পাঠানো ড্রোনগুলোর একটি বড় অংশ এখনো জর্ডানের আকাশসীমা অতিক্রম করার আগেই প্রতিহত করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও সামরিক পর্যবেক্ষকদের বরাতে জানা গেছে, জর্ডান তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণ প্রস্তুত অবস্থায় রেখেছে এবং একাধিকবার ইরানি ড্রোন গুলি করে নামিয়েছে। এই পদক্ষেপ ইসরায়েলকে অপ্রত্যাশিত এক সহায়তা দিলেও, জর্ডানের জন্য তা জটিল কূটনৈতিক বাস্তবতা তৈরি করছে।
জানা গেছে, ইরান থেকে ছোড়া ড্রোনগুলো সরাসরি ইসরায়েলের সামরিক ও কৌশলগত স্থাপনার দিকে ধাবিত হচ্ছিল। কিন্তু সেগুলো জর্ডানের আকাশসীমা ব্যবহার করছিল বলে দেশটি তা নিজের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে এবং সেই কারণে ড্রোনগুলোর বিরুদ্ধে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। বিভিন্ন সূত্র বলছে, জর্ডান ইতোমধ্যেই অন্তত ৮-১০টি ড্রোন ভূপাতিত করেছে, যেগুলো ইসরায়েলের দিকেই ধাবিত হচ্ছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জর্ডান সরাসরি কোনো পক্ষ না নিয়েও কার্যত ইসরায়েলকে রক্ষা করছে। এই ভূমিকাকে কেউ কেউ ‘নীরব মিত্রতা’ হিসেবে দেখছেন, আবার অনেকে বলছেন, জর্ডান কেবল তার আকাশসীমা রক্ষা করছে, এর সঙ্গে কোনো সামরিক অবস্থান জড়িত নয়। তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ইরানের বিরুদ্ধে এই প্রতিরোধ ইসরায়েলের উপকারেই কাজে আসছে এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
জর্ডানের এই অবস্থানের ফলে তেহরান-আম্মান সম্পর্কেও টানাপোড়েন দেখা দিতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইরান হয়তো এই প্রতিরোধকে 'অঘোষিত যুদ্ধ' হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে, যার ফলে ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যে কূটনৈতিক ও সামরিক জোটে পুনর্গঠন দেখা যেতে পারে। জর্ডান এখন এমন এক জায়গায় অবস্থান করছে, যেখানে একদিকে তাকে আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখতে হবে, অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপে ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হবে।
এদিকে ইসরায়েল এই ‘অপ্রত্যাশিত সহায়তা’কে কৌশলগতভাবে কাজে লাগাতে শুরু করেছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সরাসরি মন্তব্য না করলেও, সামরিক সূত্র জানিয়েছে, ড্রোন আক্রমণ ব্যর্থ হওয়ায় ইরানের কৌশলে ধাক্কা লেগেছে।
এই ঘটনার মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধাবস্থার আশঙ্কা আরও ঘনীভূত হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, জর্ডান ভবিষ্যতেও এই রণনীতিগত অবস্থান ধরে রাখে কিনা এবং ইরান কীভাবে এর জবাব দেয়।