প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৫, ১১:৪৬
মধ্যপ্রাচ্যের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী লেবাননের হিজবুল্লাহ অবশেষে স্পষ্টভাবে ইরানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিজবুল্লাহর সেক্রেটারি জেনারেল শেখ নাঈম কাসেম শুক্রবার ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার হুমকিকে পুরো অঞ্চলের বিরুদ্ধে আগ্রাসন হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই হুমকি শুধু ইরানের নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের মানুষের জন্য হুমকি স্বরূপ।
হিজবুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত হলেও গত বছরের ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ সংঘর্ষের পর সংগঠনটি কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই তারা এখনও লেবাননের সীমান্তে সরাসরি সক্রিয় হয়নি। তবে সম্প্রতি মার্কিন ও ইসরায়েলি হুমকির মধ্যে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে তারা।
শেখ নাঈম কাসেম তার বিবৃতিতে জানান, “আমরা হিজবুল্লাহ এবং ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করছি যে, ইরানের স্বাধীনতা এবং বৈধ অধিকারের পক্ষে আমরা দৃঢ়ভাবে অবস্থান নিচ্ছি। আমেরিকা এবং তার মিত্র ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আমরা কোনো অবস্থানে নিরপেক্ষ নই।” তিনি আরও বলেন, এই যুদ্ধে হিজবুল্লাহ যা প্রয়োজন মনে করবে, তা সম্পূর্ণরূপে করবে।
গুরুত্বপূর্ণ যে, গত ১৩ জুন থেকে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক লক্ষ্যবস্থুগুলোর ওপর একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে। এসব হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীসহ বহু সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন। জবাবে ইরান ইসরায়েলের উপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে, যার ফলে তেল শোধনাগার, বন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যে এই উত্তেজনা দিনদিন তীব্র হচ্ছে এবং অঞ্চলজুড়ে রাজনৈতিক ও সামরিক অনিশ্চয়তা বাড়ছে। হিজবুল্লাহর এই ঘোষণার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। বিশ্ব সম্প্রদায় এই সংঘর্ষের মাপকাঠি ও পরিণতি নিয়ে গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
হিজবুল্লাহর এই পদক্ষেপ ইরানের প্রতি তাদের একতার পরিচায়ক এবং মার্কিন ও ইসরায়েলি হুমকির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী জবাব হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ স্থিতিশীলতার জন্য এর প্রভাব গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।