প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ২১:২৯
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সামরিক পদক্ষেপ না নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার। তিনি মনে করেন, এই সংকটে যেকোনো রকম সামরিক পদক্ষেপ পুরো অঞ্চলজুড়ে সংঘাত বাড়িয়ে দেবে এবং এতে বিপুল মানবিক ও কূটনৈতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, স্টারমার দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘এই পরিস্থিতিতে কূটনীতি ছাড়া আর কোনো বাস্তবসম্মত সমাধান নেই।’ তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এর আগেও একাধিক দফা আলোচনা হয়েছে এবং তাতে বেশ কিছু অগ্রগতিও হয়েছে বলে তার ধারণা।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন যুক্তরাজ্যের নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি একটি কূটনৈতিক সফরে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হচ্ছেন। তার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো, যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক মার্কো রুবিওর সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা। জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে যৌথ কৌশল নিয়ে কথা বলবেন দুই নেতা।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুক্তরাজ্যের এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ শুধুই আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এটি ইউরোপের শক্তিশালী একটি দেশের মধ্যস্থতাকারী ভূমিকার ইঙ্গিত বহন করছে। স্টারমার প্রশাসন বিশেষভাবে মনে করছে, যুদ্ধের পথে না গিয়ে আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনা প্রশমনের সুযোগ এখনো আছে এবং যুক্তরাষ্ট্রকে সে পথেই উৎসাহিত করা জরুরি।
ব্রিটেনের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চে স্টারমারের এই অবস্থান প্রশংসিত হলেও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ওয়াশিংটনের প্রভাবশালী সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা কতটা যুক্তরাজ্যের পরামর্শকে গুরুত্ব দেবে। তবে কিয়ের স্টারমার দৃঢ়ভাবে বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি ও বাস্তবতাকে বিবেচনায় নেবে।’
এই মুহূর্তে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনার যে মাত্রা তা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, বিশ্ব রাজনীতিকেই নাড়া দিয়েছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে এই আলোচনাকে ভবিষ্যতের জন্য একটি সম্ভাব্য শান্তিপূর্ণ পথনির্দেশ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কী হবে, তা নির্ভর করছে মার্কিন প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ কৌশল ও আন্তর্জাতিক চাপের ভারসাম্যের ওপর। স্টারমার ও ল্যামির কূটনৈতিক পদক্ষেপ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা জানতে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।