প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ২০:১৬
ইরানে ইসরায়েলি হামলার পরপরই দৃঢ় সমর্থনের বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র বুশেহারে রাশিয়ার প্রায় ২৫০ জন বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন এবং আরও শতাধিক ব্যক্তি বিভিন্ন সহযোগিতায় যুক্ত রয়েছেন, যা সংখ্যায় প্রায় ৬০০ জনের কাছাকাছি। তিনি বলেন, রাশিয়া কখনোই ইরানকে একা ফেলে দেবে না। এমন এক সময়ে এই ঘোষণা এসেছে যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পুতিনের এই মন্তব্য দেওয়া হয়েছে সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের সংবাদ সম্মেলনে। সেখানে তিনি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানকেও ধন্যবাদ জানান রাশিয়া-ইউক্রেন উত্তেজনার নিরসনে মধ্যস্থতায় ভূমিকার জন্য।
রুশ প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, রাশিয়া ইরানের পরমাণু প্রকল্পের ওপর নজর রাখতে প্রস্তুত, যেন এই শক্তি কেবলমাত্র শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হয়। তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন, ইরান চাইলে রাশিয়াই এই প্রকল্পের দায়িত্ব নিতে পারে এবং বিশ্বে শান্তির বার্তা দিতে পারে। এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে এই বিষয়ে ফোনে কথা হয়েছে বলেও জানান পুতিন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, বুশেহারের পারমাণবিক এলাকায় ইসরায়েল হামলা চালাবে না।
বুশেহার শহরে দুটি নতুন পারমাণবিক চুল্লি নির্মাণের কাজ চলছে এবং এতে রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দুই দেশের পারস্পরিক কৌশলগত সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। পুতিনের বক্তব্যে উঠে আসে, ইরানের নিরাপত্তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি ইসরায়েলের উদ্বেগও উপেক্ষিত নয়। দুই পক্ষের মধ্যকার উদ্বেগ দূর করে একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও শান্তিপূর্ণ সমাধান সম্ভব বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।
অস্ত্র চুক্তি প্রসঙ্গে পুতিন বলেন, ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সাম্প্রতিক চুক্তিতে অস্ত্র সরবরাহের কোনো শর্ত নেই এবং ইরানও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অস্ত্র দাবি করেনি। তবে ভবিষ্যতে পরিস্থিতির পরিবর্তনে বিষয়টি বিবেচনায় আসতে পারে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এই অবস্থান রাশিয়াকে একটি মধ্যস্থতাকারী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছে। পুতিনের শান্তিপূর্ণ পরমাণু ব্যবহারের আহ্বান মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার এক নতুন বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।