প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ১৩:৫১
মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নতুন মাত্রায় পৌঁছেছে ইরানের পাল্টা হামলায় ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত হানার পর। বৃহস্পতিবার ভোরে ইরানের সামরিক বাহিনীর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বিয়ের শেভার সামরিক কমান্ড সেন্টার, গোয়েন্দা সদর দপ্তর এবং একটি সামরিক শিবির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরান সরকারের সংবাদমাধ্যম ইরনা।
ইরনা জানায়, এই আক্রমণ ছিল অত্যন্ত নিখুঁত এবং লক্ষ্যভেদে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম হয়েছে। তিনটি স্থাপনাতেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। তবে এই হামলার পাশে অবস্থিত সোরোকা নামের একটি হাসপাতাল মূল হামলা থেকে রক্ষা পেলেও শকওয়েভের কারণে সেখানে কিছু কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
এ হামলা মূলত ইসরায়েলের চালানো ‘অপারেশন দ্য রাইজিং লায়ন’-এর প্রতিক্রিয়ায় ঘটেছে। ইসরায়েল গত ১৩ জুন ভোর থেকে ইরানের বিভিন্ন স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করে। দেশটির দাবি, ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে, এ অভিযোগের ভিত্তিতেই তারা অভিযান শুরু করেছে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, এই হামলায় এ পর্যন্ত ছয় শতাধিক মানুষ নিহত এবং অন্তত ১ হাজার ৩০০ জন আহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ইরানও ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’ নামের পাল্টা অভিযান শুরু করেছে। এতে ইসরায়েলের কিছু স্থাপনায় আঘাত হানার পাশাপাশি সামরিক ও বেসামরিক হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।
তবে ইসরায়েল এখনও নিহত বা আহতের সংখ্যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এবং পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো বলছে, এই উত্তেজনা আরও বড় সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে যদি দুই দেশ সামরিক অভিযান থামাতে ব্যর্থ হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সংঘর্ষ শুধু ইসরায়েল-ইরান সীমাবদ্ধ না থেকে গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। এ কারণে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাও কূটনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নজর এখন কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ওপর কেন্দ্রীভূত হয়েছে। যুদ্ধের আগুন যেন সমগ্র অঞ্চলে না ছড়িয়ে পড়ে, সে দায়িত্ব এখন বিশ্ব নেতাদের কাঁধে।