প্রকাশ: ৯ জুন ২০২৫, ১১:৩৩
ইতালি থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার উদ্দেশে রওনা হওয়া আন্তর্জাতিক ত্রাণবাহী জাহাজ 'ম্যাডলিন' ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের আওতায় পরিচালিত জাহাজটি গাজার উপকূলে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জোর করে ইসরায়েলের আশদাদ বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা আলজাজিরা।
জাহাজটিতে সাংবাদিক, পরিবেশকর্মী ও মানবাধিকারকর্মীসহ ১৩ জন যাত্রী ছিলেন। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনের নেত্রী গ্রেটা থুনবার্গ, ফরাসি চিকিৎসক বাপতিস্ত আন্দ্রে, আলজাজিরার সাংবাদিক ওমর ফায়াদ, এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ঘটনাটির সত্যতা নিশ্চিত করে জানায়, 'সেলফি জাহাজ' হিসেবে অভিহিত এই নৌযানটিকে মধ্যরাতে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং যাত্রীদের নিরাপদে রাখা হয়েছে। এমনকি তাদের খাদ্য ও পানীয় সরবরাহও করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তারা।
তবে এই ঘটনার কড়া প্রতিক্রিয়া এসেছে আন্তর্জাতিক মহল থেকে। যুক্তরাষ্ট্রের রাটগার্স ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক আদিল হক বলেন, এমন আচরণ আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন এবং যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। মার্কিন মুসলিম অধিকার সংগঠন সিএআইআরও এই ঘটনাকে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস এবং জলদস্যুতা বলে আখ্যা দিয়েছে।
জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেসকা আলবানিজ বলেন, ইসরায়েলের গাজা নিয়ন্ত্রণের কোনো বৈধতা নেই এবং গাজাবাসীদের সহায়তা করতে অবরোধ তুলে নেওয়া জরুরি। তিনি জানান, অভিযান চলাকালে ম্যাডলিন জাহাজের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে শেষবার তার যোগাযোগ হয়, যখন তিনি বলেন, 'আরেকটি নৌকা আমাদের দিকে এগিয়ে আসছে।'
এছাড়া, ঈদুল আজহার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন থেমে নেই। গাজার বিভিন্ন শহরে চালানো বোমা হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। ঈদের তৃতীয় দিনেও ভয়াবহ বোমা বর্ষণে হাসপাতালগুলোয় লাশের সারি দীর্ঘ হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৮টি মৃতদেহ এবং ৩৯৩ জন আহতকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। তবে স্থানীয় হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা সামর্থ্য অনেক আগেই হারিয়ে গেছে, ফলে আহতদের সঠিক চিকিৎসা পাওয়াও কঠিন হয়ে পড়েছে।