প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৫, ১১:২৮
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর বর্বরতা যেন থামছেই না। গত ৪৮ ঘণ্টায় রাফায় একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে গুলিবর্ষণের ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। এ সময় সহায়তার আশায় জড়ো হওয়া অসহায় মানুষদের ওপর অতর্কিতে গুলি চালানো হয়।
আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, নিহতরা সবাই গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশনের একটি ত্রাণ বিতরণ স্থানে অপেক্ষা করছিলেন। ওই সময় সেখানে হাজার হাজার মানুষ খাবার ও মানবিক সহায়তার আশায় জড়ো হয়েছিলেন। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ক্ষুধার্ত মানুষেরা আতঙ্ক নিয়ে দৌড়াচ্ছেন, অনেকেই মাটিতে লুটিয়ে পড়ছেন।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরাইলি বাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে বেসামরিক মানুষকে টার্গেট করেছে। সরাসরি গুলি চালানোর ফলে কমপক্ষে ৬২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। অথচ ওইসব মানুষ কেবল ত্রাণ সংগ্রহের আশায় এসেছিলেন।
ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ-এর প্রধান এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইলকে অবিলম্বে জাতিসংঘ-সমর্থিত মানবিক তৎপরতা পরিচালনার সুযোগ দিতে হবে।
এই হত্যাকাণ্ডের দিনে ঠিক কতজনকে গুলি করা হয়েছে, সে বিষয়ে এখনো কোনো নির্দিষ্ট তথ্য মেলেনি। তবে মিডিয়া অফিস একে একটি জঘন্য মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে এবং বলেছে, এখন ত্রাণ কেন্দ্রগুলোও মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি বাহিনী গাজায় লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই দীর্ঘমেয়াদি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ হাজারেরও বেশি মানুষ, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২২ হাজার।
মানবিক সহায়তা নিতে গিয়ে যদি একজন মানুষ জীবন হারায়, তবে তা কেবল একটি ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং গোটা মানবতার ওপর এক গা শিউরে ওঠা আঘাত। গাজা যেন এক দীর্ঘশ্বাসের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ব বিবেকের সামনে।
অবিলম্বে গাজায় মানবিক তৎপরতা নিশ্চিত করা এবং ইসরাইলের এই নির্মমতার বিরুদ্ধে কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ গ্রহণ এখন সময়ের দাবি।