প্রকাশ: ১৩ মে ২০২৫, ২১:১
বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, কোনো উপযুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ না করে দেশের অন্যতম একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ একটি গুরুতর ঘটনা, যা ভারতের মতো একটি গণতান্ত্রিক দেশের জন্য উদ্বেগজনক।
মুখপাত্র জয়সওয়াল আরও বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিসর ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে এবং সেখানে গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে। এসব ঘটনায় ভারত গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ভারত সবসময় দক্ষিণ এশিয়ায় স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক অগ্রগতিকে সমর্থন করে এসেছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব অনুষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন। ভারত সেই প্রক্রিয়াকে সর্বতোভাবে সমর্থন জানায় এবং রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। এর ফলে দলটির নেতাকর্মীরা এখন আর কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না।
সরকার জানিয়েছে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে বিচার শুরু হবে। বিচার চলাকালে দলটি এবং তাদের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে স্থগিত থাকবে।
একই দিনে সরকার একটি সংশোধিত অধ্যাদেশ জারি করে, যার মাধ্যমে ট্রাইব্যুনাল এখন রাজনৈতিক দল, অঙ্গ সংগঠন কিংবা সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং পরে তা অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হয়। এই সিদ্ধান্ত দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক পর্ব শুরু হয়েছে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে। তবে প্রতিবেশী ভারতের এমন স্পষ্ট প্রতিক্রিয়া ইঙ্গিত দেয়, এই নিষেধাজ্ঞার আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়াও বড় পরিসরে তৈরি হতে পারে।