প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ২৩:৯
ভারতের অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে নয়াদিল্লি। দেশটির সরকার আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পাশাপাশি ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তিও স্থগিত করা হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রি নয়াদিল্লিতে সাংবাদিকদের জানান, বৈধ নথিপত্রধারীরা ১ মে’র আগেই সীমান্ত পার হতে পারবেন। এরপর এই সীমান্ত দিয়ে আর কোনো যাতায়াতের সুযোগ থাকবে না।
কাশ্মীরের পেহেলগামে মঙ্গলবার বিকালে চালানো সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। জঙ্গিরা জঙ্গল থেকে বের হয়ে পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর–ই–তৈয়েবার সহযোগী সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)।
এই হামলার পরদিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির জরুরি বৈঠকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে পাঁচ দফা কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
প্রথমত, ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তান সীমান্তে সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করা পর্যন্ত এই চুক্তি কার্যকর হবে না।
দ্বিতীয়ত, আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত অবিলম্বে বন্ধ করে দেওয়া হবে। বৈধ নথিপত্রধারীরা ১ মে’র আগে সীমান্ত ছাড়ার সুযোগ পাবেন।
তৃতীয়ত, সার্ক ভিসা এক্সেম্পশন স্কিমের আওতায় পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারতে ভ্রমণের অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। এ স্কিমে যেসব নাগরিক ইতোমধ্যে ভারতে আছেন, তাদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
চতুর্থ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নয়াদিল্লিতে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনের সামরিক, নৌ ও বিমান উপদেষ্টাদের ‘পার্সোনা নন গ্রাটা’ ঘোষণা করে এক সপ্তাহের মধ্যে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ইসলামাবাদ থেকে ভারতের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টাদের প্রত্যাহারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
শেষত, উভয় দেশের হাইকমিশনের জনবল সীমিত করে ৫৫ থেকে ৩০ জনে নামিয়ে আনা হচ্ছে। এটি ১ মে’র মধ্যে কার্যকর হবে।
এদিকে পাকিস্তান হামলার নিন্দা জানালেও ভারতের অবস্থান অনড়। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে এক বিবৃতি দেয়।
বাংলাদেশও এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো বার্তায় বলেন, এ ধরনের জঘন্য হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। বাংলাদেশের অবস্থান সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বরাবরই কঠোর।