প্রকাশ: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ১:৫১
ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে মঙ্গলবার ঘটে যাওয়া ভয়াবহ হামলায় কমপক্ষে ২৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই ‘পর্যটক’ পরিচয়ে সেখানে অবস্থান করছিলেন বলে জানা যায়। তবে এই হামলাকে কেন্দ্র করে পুরো অঞ্চলজুড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
কাশ্মীরভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী দ্য রেজিসটেন্স ফোর্স (টিআরএফ) হামলার দায় স্বীকার করেছে। গোষ্ঠীটি বুধবার এক বিবৃতিতে দাবি করে, তারা সাধারণ পর্যটকদের টার্গেট করেনি। নিহতরা নাকি ছিল ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর গোপন সদস্য, যারা পর্যটকের ছদ্মবেশে কাশ্মীরে প্রবেশ করে গোয়েন্দা তৎপরতায় নিয়োজিত ছিলেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, টিআরএফ কাশ্মীরে তাদের কার্যক্রম আরও জোরদার করবে এবং এমন হামলা চলতেই থাকবে। তারা নয়াদিল্লির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ নীতির জবাব এভাবেই দেওয়া হবে।
গোষ্ঠীটি পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, এই হামলা শুধুমাত্র ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার নয়, বরং সেই সব পক্ষের বিরুদ্ধে যারা সরকারের কাশ্মীর নীতিকে সমর্থন করে। এমনকি তারা আগাম হুমকির ভাষায় বলে, পরবর্তীতে আরও বড় ধরণের প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।
ভারত সরকার এখনো পর্যন্ত টিআরএফের এই দাবি কিংবা বিবৃতির বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই হামলার পর কাশ্মীর নিয়ে ভারতের কৌশলে নতুন পরিবর্তন আসতে পারে।
হামলার পরদিন বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার নিরাপত্তা বিষয়ক কমিটির এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে পাকিস্তানের প্রতি পরোক্ষ ইঙ্গিত দিয়ে দেশটির বিরুদ্ধে পাঁচটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে।
এই সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে সীমান্ত নজরদারি বাড়ানো, গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করা এবং কাশ্মীরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি আরও শক্তিশালী করা অন্যতম। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক চাপ তৈরির পরিকল্পনাও করা হচ্ছে।
এই ঘটনার পর পেহেলগাম ও আশেপাশের এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং পর্যটকদের চলাচলের ওপর আংশিক বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী এবং আধা-সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।