তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার পারমাণবিক আলোচনার স্থান নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা ও বিভ্রান্তি। সোমবার পর্যন্ত ধারণা ছিল, আলোচনার পরবর্তী ধাপ রোমে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু মঙ্গলবার ভোরে ইরান জানায়, এই বৈঠক আবারও অনুষ্ঠিত হবে ওমানেই, যা নতুন করে আলোচনার পরিবেশে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই স্পষ্ট করেছেন যে, আলোচনা ওমানেই হবে। তবে তিনি তার বক্তব্যে আলোচনার তারিখ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে কোনো বিস্তারিত তথ্য দেননি। এদিকে এই সপ্তাহে রোমে ইস্টার সানডে উদযাপনের কারণে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে, যা এমন বৈঠকের জন্য উপযুক্ত নয় বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলোচনার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, তার ধারণা, ইরান এই আলোচনার মাধ্যমে সময়ক্ষেপণ করছে এবং কোন বাস্তব অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
প্রথম দফার আলোচনা ইতোমধ্যে ওমানে অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা দুই দেশের দীর্ঘ শত্রুতামূলক সম্পর্কের মধ্যে এক নতুন ধারা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই আলোচনায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়গুলো স্থান পেয়েছে।
ট্রাম্প এর আগে বহুবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, আলোচনার মাধ্যমে সমাধান না হলে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর ওপর সামরিক অভিযান চালানো হতে পারে। অন্যদিকে ইরানও বারবার বলেছে, তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে হলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাবনাও খারিজ করা যায় না।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জাপান সফরকালে জানান, রোমে আলোচনা অনুষ্ঠানের বিষয়ে ইতালি প্রস্তুত ছিল ওমানের অনুরোধে। তবে এখন তা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
অন্যদিকে, ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প বলেন, তিনি রোমে আলোচনার প্রস্তুতির কথা জানেন। কিন্তু ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ভেন্যু নিয়ে সিদ্ধান্ত জানায়নি।
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি চলতি সপ্তাহেই ইরান সফর করবেন। তার এই সফরে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার নিয়ে আলোচনা হবে বলেও জানানো হয়েছে।