ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘদিনের উত্তেজনার মধ্যে নতুন করে আলোচনার আভাস মিলেছে। ইরান জানিয়েছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসতে তারা প্রস্তুত। তবে এই আলোচনার আগে কিছু শর্ত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
আব্বাস আরাঘচি বলেন, আগামী শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরোক্ষ আলোচনায় অংশ নেবে ইরান। তবে সেই আলোচনা তখনই ফলপ্রসূ হবে যদি যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক হামলার হুমকি প্রত্যাহার করে। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, কোনো ধরনের জোরজবরদস্তি ইরান কখনও মেনে নেবে না।
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, এই আলোচনায় মধ্যস্থতাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখবে ওমান। আলোচনায় ইরানের প্রতিনিধি হিসেবে থাকবেন আব্বাস আরাঘচি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে থাকবেন মধ্যপ্রাচ্যে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফ।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও জানিয়েছিলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আলোচনায় বসতে তারা প্রস্তুত। তবে তিনি ইরানকে সতর্ক করে দিয়েছিলেন, আলোচনায় যদি তারা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি পরিত্যাগ করতে রাজি না হয়, তাহলে বড় বিপদে পড়তে হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি ইরানের সঙ্গে আলোচনা করবে। একই সঙ্গে ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে সামরিক হামলা চালাতে পারে।
এরপর তেহরান প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলেও পরে অবস্থান বদলে আলোচনার জন্য শর্তসাপেক্ষে সম্মতি জানায়। তেহরান বলছে, তারা মধ্যস্থতার মাধ্যমে পরোক্ষ আলোচনায় রাজি আছে।
উল্লেখ্য, ডোনাল্ড ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ইরানের সঙ্গে একটি নতুন চুক্তির ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে আসছেন। অন্যদিকে নেতানিয়াহু মনে করেন, গত বছর ইরানে ইসরায়েলি বিমান হামলার পর দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইরানকে চাপে ফেলতে চান তিনি।
ইরান-যুক্তরাষ্ট্রের এই আলোচনাকে ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে এই আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার কোনো পথ খুঁজে পাওয়া যায় কিনা।