কুমিল্লার যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় নতুন তথ্য প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ৩১ জানুয়ারি রাতে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর তৌহিদুল ইসলাম মৃত্যুবরণ করেন। কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃতদেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়, যা পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার অভিযোগ উত্থাপন করে। বিষয়টি নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, 'যেকোনো ধরনের নির্যাতন ও হত্যা' সরকারের কাছে অগ্রহণযোগ্য। তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এই ঘটনাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে একটি উচ্চপদস্থ কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা তদন্ত করবে। এছাড়া তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর পর সেনা ক্যাম্পের কমান্ডারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে, পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, তৌহিদুল ইসলামকে নির্যাতন করা হয়েছিল, যার ফলে তার মৃত্যু ঘটে। পরিবারের সদস্যদের মতে, তৌহিদুলের শরীরে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যু কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার পাঁচথুবী ইউনিয়নের একটি শোকের মুহূর্তে পরিণত হয়েছে, যেখানে তার বাবা মোখলেছুর রহমানের কুলখানি উপলক্ষে তিনি বাড়ি ফিরেছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, যখন তৌহিদুল ইসলামকে হাসপাতালে নেওয়া হয়, তখন তিনি অচেতন ছিলেন এবং সেখানেই তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। তৌহিদুলের মৃত্যু নিয়ে পুলিশ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি, তবে ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে তারা জানিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুমিল্লায় এই ঘটনার পর দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে মানুষের আস্থাহীনতা বেড়ে যেতে পারে। তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর পর তার পরিবারের অভিযোগ নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে সরকার।
পরিবারের অভিযোগ অনুযায়ী, তৌহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না এবং তাকে বিনা কারণে আটক করা হয়েছিল। তাছাড়া, তৌহিদুল ইসলামের স্ত্রী ও চার কন্যাসন্তান রয়েছে, যারা এখন গভীর শোকের মধ্যে রয়েছে।
মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার মনে করে, এ ধরনের ঘটনা দেশের বিচারব্যবস্থায় আরও উন্নতি আনার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। সরকার ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করবে। পাশাপাশি, সার্বিকভাবে দেশের আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থার পুনর্বিবেচনা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
এই ঘটনার পর কুমিল্লায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং রাজনীতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, অপরাধীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তদন্তে প্রমাণিত হলে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।