প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৮
সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, দেশের সকল শ্রেণির মানুষকে নিয়ে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন তার প্রধান লক্ষ্য। তিনি বলেছেন, একটি জাতীয় সংলাপ সম্মেলন আয়োজন করা হবে, যেখানে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর সকল পক্ষের অংশগ্রহণে একটি কার্যকর সরকার গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আহমেদ আল-শরা বলেছেন, সিরিয়া একটি বৈচিত্র্যময় দেশ, যেখানে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। তাই সরকার গঠনের ক্ষেত্রে সকলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি জানান, দেশ পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন করা হবে, যা পার্লামেন্টে বসে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা করবে। একই সঙ্গে একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়া হবে।
গত ডিসেম্বর মাসে ইসরায়েলের সরকার থেকে বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করার পর ধীরে ধীরে ক্ষমতায় আসেন আহমেদ আল-শারা। ক্ষমতা গ্রহণের পর তার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেওয়া। এজন্য তিনি আলোচনার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রিত করতে চান।
তিনি আরও জানান, জাতীয় সংলাপ প্রক্রিয়ার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে বিরোধী দলসহ সকলের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। জনগণের আস্থা ফেরাতে তিনি একটি স্বচ্ছ সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রেসিডেন্ট আহমেদ ভবিষ্যতে নতুন সংবিধান প্রণয়নের পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, একটি সংবিধান প্রণয়ন কমিটি গঠন করা হবে, যা নতুন সংবিধানের খসড়া তৈরি করবে এবং দেশের জনগণের মতামত নিয়ে তা চূড়ান্ত করা হবে।
তিনি বলেছেন, নতুন সংবিধান তৈরি ও পরবর্তী নির্বাচন সম্পন্ন করতে কমপক্ষে চার বছর সময় লাগতে পারে। এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনা করবে এবং ধাপে ধাপে প্রশাসনিক সংস্কার করা হবে।
আহমেদ আল-শরা মনে করেন, সিরিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য রাজনৈতিক সংলাপ অত্যন্ত জরুরি। এজন্য তিনি সকল পক্ষকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সিরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে চলা অস্থিরতার অবসান ঘটানোর জন্য আহমেদ আল-শরার এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ভর করছে সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ও সংবিধান পরিবর্তনের গতির ওপর।
