প্রকাশ: ৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১:৪৬
সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল আসাদ সরকারের পতনের পর দেশটির রাজনৈতিক ও সামরিক পরিস্থিতি সম্পূর্ণভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিদ্রোহীদের দখলে চলে গেছে সিরিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চল। রোববার (৮ ডিসেম্বর) সিরিয়ার গণমাধ্যম সূত্রে টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, সিরিয়ার গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের সেনা উপস্থিতি বাড়িয়েছে। এটি ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো ঘটছে এবং সিরিয়ার বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী গোলান মালভূমির সিরিয়া-ইসরায়েল সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনা মোতায়েন করেছে। তবে গোলান মালভূমি অঞ্চলের স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য কোনো নতুন নিয়মাবলি এখনও চালু করা হয়নি। ইসরায়েলি সেনারা জানিয়েছে, তাদের মূল উদ্দেশ্য হল গোলান মালভূমি ও এর আশপাশের এলাকা নিরাপদ রাখা, যাতে সিরিয়ার বিদ্রোহীরা আরও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে না পারে।
বিদ্রোহীদের দখলে সিরিয়ার বিশাল অঞ্চল চলে যাওয়ার পর, ইসরায়েলি বাহিনী দামেস্কের কাছে রাসায়নিক অস্ত্রের গুদাম এবং অন্যান্য সামরিক স্থাপনাগুলিতে আকাশ থেকে বোমা হামলা চালায়। এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল, এসব অস্ত্র বিদ্রোহীদের হাতে না পড়ে এবং সিরিয়ায় অতিরিক্ত অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি না হয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জাতিসংঘ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে বিদ্রোহীদের প্রতিরোধ করার পরিকল্পনা করেছে। তারা ইসরায়েলের সীমান্তবর্তী হাদের শহরে অতিরিক্ত স্থল ও বিমানসেনা মোতায়েন করেছে। গোলান মালভূমি থেকে আর্টিলারি শেল নিক্ষেপের খবরও পাওয়া গেছে, তবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
একই সময়ে, ইসরায়েল সেনারা লেবানন সীমান্তের কাছে হেজবুল্লাহর একটি কনভয়ে আক্রমণ করেছে, যা সিরিয়া থেকে পালিয়ে লেবাননে যাচ্ছিল। এই কনভয়ে অন্তত ১৫০টি ট্যাঙ্ক ও সামরিক গাড়ি ছিল।
এ পদক্ষেপগুলোতে ইসরায়েল তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে, কিন্তু এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সিরিয়ার অভ্যন্তরে আরও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, যদি ইসরায়েল ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সরাসরি সংঘর্ষ ঘটে, তাহলে পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করতে পারে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালে ইসরায়েল সিরিয়ার গোলান মালভূমির অধিকাংশ অংশ দখল করে নেয় এবং ১৯৮১ সালে পুরো অঞ্চলটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। ১৯৭৪ সালের পর প্রথমবারের মতো, গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি সেনার উপস্থিতি বেড়েছে, যা নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে।