প্রকাশ: ১৮ আগস্ট ২০২৫, ১৫:৫৫
ইসরাইলের বাজান রিফাইনারিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম। বার্তা সংস্থা মেহেরের প্রতিবেদনে জানা যায়, গত ১৭ জুন ভোরের আগে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রটি রিফাইনারির একটি কক্ষে আঘাত হানে। এতে তিনজন ধ্বংসস্তূপ ও আগুনের মধ্যে আটকা পড়ে প্রাণ হারান।
হিব্রু দৈনিক ইসরাইল হায়োম জানিয়েছে, হামলায় রিফাইনারির জ্বালানি স্থাপনা ও আলোকসজ্জা ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাজান কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় জানিয়েছে, সমস্ত স্থাপনা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে এবং আগামী কয়েক মাসে ধীরে ধীরে উৎপাদন কার্যক্রম পুনরায় শুরু হবে। কোম্পানিটি প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫০ থেকে ২০০ মিলিয়ন ডলার হিসেবে অনুমান করেছে।
ইসরাইলের এ আগ্রাসনের পেছনে গত ১৩ জুন থেকে টানা ১২ দিন ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলার ঘটনা জড়িত। এরপর ২২ জুন যুক্তরাষ্ট্র নাতাঞ্জ, ফোর্ডো ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলা চালায়। এই হামলার জবাবে ইরানি সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে।
ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর এয়ারোস্পেস ফোর্সের ট্রু প্রমিজ–৩ অভিযানের অংশ হিসেবে ইরান ইসরাইলের বিভিন্ন স্থানে ২২ দফা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। এই হামলার ফলে ইসরাইলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হয় এবং দেশটির স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি হয়।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়। যুদ্ধবিরতি ২৪ জুন থেকে কার্যকর হয় এবং সংঘর্ষ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়। এই ঘটনার ফলে ইরান ও ইসরাইলের মধ্যকার উত্তেজনা আন্তর্জাতিকভাবে দৃষ্টিগোচর হয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ইসরাইলের জ্বালানি নিরাপত্তা ও শিল্প স্থাপনার ওপর একটি বড় সংকেত হিসেবে কাজ করেছে। পাশাপাশি, এটি মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক উত্তেজনা এবং শক্তির ভারসাম্যের দিকেও নজর দেয়।
এই হামলা ইরান-ইসরাইলের রাজনৈতিক ও সামরিক দ্বন্দ্বের নতুন অধ্যায়কে সামনে নিয়ে এসেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হামলার ক্ষতি ও উত্তেজনার বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে তদারকি বৃদ্ধি করেছে।
ঘটনার পর ইসরাইলী কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পুনরায় হুমকি মোকাবিলার প্রস্তুতি শুরু করেছে।
ইসরাইল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনা এবং ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ঘটনা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও বিশ্লেষক মহলে গুরুত্বসহকারে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।