প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৮
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় আবারও তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৭১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫১ জন। এর মধ্যে গাজা সিটিতেই নিহত হয়েছে ৩৭ জন। ইসরায়েলি বাহিনী এখানে আরও বৃহত্তর হামলার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে আনাদোলু এজেন্সি।
আল-আহলি হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, গাজার তুফাহ এলাকায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও একজন প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের অনেককে চিকিৎসা দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, অনাহার ও অপুষ্টিতে নতুন করে আরও দুজন মারা গেছেন, যার মধ্যে একটি শিশুও রয়েছে। এতে দুর্ভিক্ষ-সম্পর্কিত মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭৩ জনে। এর মধ্যে ১১২ জন শিশু। অনেক ভুক্তভোগী এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে অথবা রাস্তায় পড়ে আছেন। উদ্ধারকারীরা বোমা হামলা ও সরঞ্জামের অভাবে তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ১৮ মার্চ থেকে ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময় চুক্তি ভেঙে সামরিক অভিযান শুরু করার পর থেকে ১০ হাজার ৭১৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ৪৫ হাজার ৩২৪ জন আহত হয়েছেন। এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।
মানবিক সহায়তা নিতে আসা বেসামরিক নাগরিকরাও ইসরায়েলি হামলার শিকার হচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় এমন হামলায় ২৪ জন নিহত এবং ১৩৩ জন আহত হয়েছেন। ২৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত সহায়তা নিতে গিয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২ হাজার ৬০ জন এবং আহতের সংখ্যা ১৫ হাজার ১৯৭ জন।
এদিকে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, হামাস যদি যুদ্ধ শেষ করার শর্তে সম্মত না হয় তবে গাজার বৃহত্তম শহর ধ্বংস করে দেওয়া হবে। তার দাবি, বন্দিদের মুক্তি ও হামাসের নিরস্ত্রীকরণই যুদ্ধবিরতির প্রধান শর্ত।
হামাস জানিয়েছে, তারা বন্দিদের মুক্তি দিতে রাজি হলেও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠন ছাড়া নিরস্ত্রীকরণে সম্মত হবে না। এর ফলে যুদ্ধ থামার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলমান সংঘাতে গাজায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৬২ হাজার ২৬৩ জন নিহত এবং ১ লাখ ৫৭ হাজার ৩৬৫ জন আহত হয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি সাম্প্রতিক ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়।