প্রকাশ: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১:১৬
রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকটের কারণে খুব দ্রুতই অর্থনীতির উপর প্রভাব পড়তে পারে। অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির মতো রাশিয়ার ও ইউক্রেনের অবদানও যথেষ্ট উল্লেখ করার মতো। কারণ অর্থনীতির উন্নয়নে প্রত্যেক দেশই চেইন হিসেবে যুক্ত রয়েছে।
গত ১৩ বছর ধরে গম উৎপাদন বেড়েই চলছে। ফলে বিশ্বব্যাপী এ খাদ্যের তেমন কোনো সংকট দেখা দেয়নি। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান সংকটের কারণে কমে যেতে পারে গম উৎপাদন। ফলে দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট।
রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকটের কারণে বিশ্ব অর্থনীতি কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে এবং কোন কোন ধরনের পণ্যের দাম বাড়তে পারে তা তুলে ধরেন মিন্ট।
১. জ্বালানি
অনেক ইউরোপীয় দেশ রাশিয়ার জ্বালানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, বিশেষ করে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পাইপলাইনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। এই নির্ভরতার ওপর ভিত্তি করে সংকটের প্রতি বিভিন্ন দেশের মনোভঙ্গি নির্ধারিত হয়। রাশিয়ার জ্বালানির ওপর এই নির্ভরশীলতার কারণে ইউরোপীয় দেশগুলো তাকে এখনই আন্তর্জাতিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সুইফট থেকে বিচ্যুত করতে চায় না। রাশিয়া থেকে ইউরোপের গ্যাস সরবরাহ এখনই পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে, এমন সম্ভাবনা কম। তবে এই সরবরাহে সামান্য ব্যাঘাত ঘটলেও বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।
২. খাদ্যমূল্য
বিশ্বের এক-চতুর্থাংশের বেশি গমের সরবরাহ আসে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। আর বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি সূর্যমুখী তেল সরবরাহ করে ইউক্রেন। তবে গমের ব্যাপারটা গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের প্রধান খাদ্য রুটি। দেশে গত কয়েক মাসে কেজিপ্রতি আটার দাম ১০ টাকার মতো বেড়েছে। এর প্রভাবে বেকারি পণ্যের দামও বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে গমের সরবরাহ বিঘ্নিত হলে দেশে গমের দাম আরও বাড়তে পারে।
৩. পরিবহন সংকট
জ্বালানির দাম বাড়লে পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পায় এটা অবশ্যম্ভাবী। ২০১১ সালে চীনের সঙ্গে রাশিয়ার রেল যোগাযোগ শুরু হয়। ইতিমধ্যে এই রুটে ৫০ হাজার ট্রেন চলাচল করেছে। তবে সম্প্রতি এই লাইন ইউক্রেন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফলে যুদ্ধের কারণে এ যোগাযোগ তেমন একটা বিঘ্নিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যতটুকুই হোক, তার প্রভাব সাধারণ মানুষের গায়ে লাগবে।
৪. মাইক্রোচিপ
করোনার কারণে ২০২১ সালে সবচেয়ে বড় সংকটের ক্ষেত্র ছিল মাইক্রোচিপ। কিন্তু ২০২২ সালে এ সংকট কেটে যাবে বল ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া ও ইউক্রেন সংকটের কারণে মাইক্রোচিপ সংকট উৎপাদন আরো বাড়বে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ায় মাইক্রোচিপ সরবরাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে, অন্যদিকে মাইক্রোচিপের প্রয়োজনীয় উপকরণ, যেমন নিয়ন, প্যালাডিয়াম ও প্লাটিনামের উৎস হচ্ছে রাশিয়া। নিয়নের ৯০ শতাংশই জোগান দেয় রাশিয়া।
সূত্র: মিন্ট