ফিলিপাইনে টাইফুন রাইয়ে নিহত বেড়ে ৩৭৫

নিজস্ব প্রতিবেদক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার ২১শে ডিসেম্বর ২০২১ ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
ফিলিপাইনে টাইফুন রাইয়ে নিহত বেড়ে ৩৭৫

ফিলিপাইনের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে আছড়ে পড়া শক্তিশালী টাইফুন (ঘূর্ণিঝড়) রাইয়ে এখন পর্যন্ত প্রাণ গেছে ৩৭৫ জনের। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৫শ জন এবং নিখোঁজ আছেন কমপক্ষে ৫৬ জন।


সোমবার বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ফ্রান্সের অনলাইন সংবাদামধ্যম ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর। ফিলিপাইনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এএফপি বলেছে, ঝড় আসার পর ৩ লাখেরও বেশি মানুষ বাড়িঘর ও সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টগুলো ছেড়ে আপৎকালীন আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে উঠেছেন।


দেশটির জাতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সিয়ারগাও দ্বীপে যখন আছড়ে পড়েছিল রাই, সে সময় ওই দ্বীপে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার (১২০ মাইল)। শুক্রবার সকালে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার।


দুই দিনের ঝড়ের তাণ্ডব ও প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট ভূমিধস এবং গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে ফিলিপাইনের গোটা মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ সড়ক। অসংখ্য ভবন ও বাড়িঘরের ছাদ-দরজা-জানালা উড়ে গেছে প্রবল বাতাসে।আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেডক্রসের ফিলিপাইন শাখা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, টাইফুন রাইয়ের কারণে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে- তাকে কেবল ‘পূর্ণাঙ্গ হত্যালীলার’ সঙ্গেই তুলনা করা যায়।


রেডক্রস কেন্দ্রীয় কমিটি চেয়ারম্যান রিচার্ড গর্ডন এক বার্তায় বলেন, ‘উপকূলীয় অঞ্চলে বাড়িঘর, হাসপাতাল, স্কুল কমিউনিটি ভবন- কোনো কিছুই অক্ষত নেই।’ঝড়ে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র ফিলিপাইনের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন দ্বীপ বোহল। দ্বীপটিতে মারা গেছেন মোট ৭৪ জন। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন বোহলের গভর্নর আর্থার ইয়াপ।


এছাড়া, টাইফুনের কারণে ব্যাপক বিপর্যয় ঘটেছে সিয়ারগাও, দিনাগাত ও মিন্দানাও দ্বীপেও। ঝড়ো বাতাস, প্রবল ‍বৃষ্টি ও ভূমিধসে বিদ্যুৎ ও মোবাইল টাওয়ার উপড়ে যাওয়া ও সড়গুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ায় যোগাযোগবিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছেন দেশটির দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলের কয়েক কোটি মানুষ।উপদ্রুত অঞ্চলগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে ফিলিপিন সরকার। সেনাবাহিনী, পুলিশ ও কোস্টগার্ডের কয়েক হাজার সদস্য যোগ দিয়েছেন এই তৎপরতায়।


ফিলিপাইনে বর্ষাকাল থাকে জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। বেশিরভাগ টাইফুন এই সময়েই হয়ে থাকে। তবে রাই আঘাত হেনেছে এমন সময়ে, যখন দেশটিতে বর্ষাকাল শেষ হয়েছে প্রায় দু’মাস আগেই।বিশ্বের সবচেয়ে জলবায়ুগত দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর একটি হলো ফিলিপাইন। প্রতিবছর গড়ে ২০ টি টাইফুন দেশটির বিভিন্ন অংশে আঘাত হানে।তবে দেশটির জলবায়ুবিদরা জানিয়েছেন, ফিলিপাইনের এযাবৎকালের ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী টাইফুন ছিল রাই।