প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২০, ১৭:৫০
বর্তমান যুগ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির যুগ। শিক্ষায়, কর্মে,জীবনধারণে এই বাক্যের সত্যতা উপলব্ধি করছি প্রতিনিয়ত। পরিবার, সমাজ,রাষ্ট্র এবং সমগ্র পৃথিবীর মানুষ যেন "প্রযুক্তি" (Technology) নামের সোপানে চড়ে পদক্ষেপে এগিয়ে চলছে। স্বাভাবিকভাবেই কালের ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞান অনেক দূর এগিয়েছে। প্রতিনিয়ত আবিষ্কৃত হয়েছে এমন কিছু যা হয়তো কয়েক কাল পূর্বেও মানুষ কল্পনা করেনি। বর্তমানেও আবিষ্কারের ধারা অব্যাহত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আসছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যার ইংরেজিতে Artificial Intelligent (A I) নামক অভাবনীয় প্রযুক্তির উন্নয়ন। বর্তমানেও বেশ কিছু ক্ষেত্রে আমরা এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সুফল পাচ্ছি।
এ আবিষ্কার মানুষকে প্রযুক্তিগত নির্ভরতায় ভিত্তি করেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমাধান দিতে পারবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।এছাড়াও বর্তমানে শিক্ষার অন্যতম পর্যায় প্রযুক্তিকে ঘিরেই এগিয়ে যাচ্ছে। অফিসের নথিপত্র আজ ডিজিটাল, মোবাইল স্ক্রিনে, ল্যাপটপ, কম্পিউটারে ভেসে থাকতে পারে। ত্রিমাত্রিক চিত্র দেখে আসলেই বিমোহিত হতে হয়। যেন একটু জায়গায় বিশাল কোনো চিত্র! দাঁড়িয়ে কিংবা ধাপে স্থাপিত হয়েছে। ভাবতেই বেশ ভালো লাগে। তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান যার নেই সে ব্যক্তিও বিজ্ঞানের এসব কর্মযজ্ঞ চোখে দেখে তার দিকে আকৃষ্ট হয়। যেন, যা কিছু সুন্দর, যা কিছু নতুন সেদিকেই মানুষের ঝোঁক!
"Work from home" এই কথাটিই তার পরিচয়। তবে, অফিসে যে ব্যক্তিক সুবিধাসমূহ পাওয়া যায় ঘরে বসে সেই সকল কাজ একা এক ব্যক্তিকেই করতে হয়। বিষয়টি এমন যে, কোনো কর্মকর্তা হয়তো ইন্টারনেটের একটি বিষয়ে বুঝতে পারছেন না, সেক্ষেত্রে অফিসে খুব সহজেই হয়তো কাওকে পেতে পারেন। কিন্তু ঘরে বসে হয়তো সেই কাজে দক্ষ কাওকে পাওয়া যায়না। এজন্য নিজেকেই সবকিছু বুঝে করতে হচ্ছে। যার প্রযুক্তি ব্যবহারের জ্ঞান যতটা উন্নত তিনি নিজের কাজ যেমন সহজে অনলাইনে সম্পাদনা করতে পারছেন, পাশাপাশি অন্যান্য সহকর্মী যারা আছেন তাদের বোধগম্য হচ্ছেনা এমন বিষয়েও পরামর্শ প্রদান করে সাহায্য করতে পারছেন। এক্ষেত্রে প্রমাণিত হচ্ছে যিনি জানেন তিনিই এগিয়ে যাচ্ছেন এবং এগিয়ে নিচ্ছেন। জ্ঞান ই তাকে সম্পদে পরিণত করতে সক্ষম।
একজন দিচ্ছেন আরেকজন গ্রহণ করছেন। আবার ব্যক্তি কাজ করছেন, সরকার ও রাষ্ট্র উপকৃত হচ্ছে। কিন্তু মোট হিসেবে উপকৃত হচ্ছি ব্যক্তি নিজে, পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্র। যতই এর ব্যবহার বাড়বে প্রযুক্তিগত চিন্তাভাবনার ক্ষেত্র তৈরী হবে । চর্চার মাধ্যমেই দক্ষতা অর্জিত হবে।যদি বর্তমান পরিস্থিতিকে বিবেচনা করা হয়, শুরুর দিকে চিত্র কেমন ছিল আর এখন কেমন?
Covid- 19 ছড়িয়ে পরলো চীন থেকে সারাবিশ্বে। বাংলাদেশও সেই মহামারির শিকার হল। লক ডাউনে আস্তে আস্তে সবকিছু বন্ধ হয়ে যেতে লাগলো। বেশি বিপদে পরে গেলো দিন আনে দিন খায় এমন শ্রেণির মানুষগুলো।বন্ধ হল সকল বিদ্যাপীঠ, অফিস আদালত, বাজার, বিপণি-বিতান এমনকি যোগাযোগের জন্য যানবাহন। নির্দেশনা এলো সবাই ঘরে থাকবার। সরকার যথাসম্ভব সাহায্য পৌঁঁছে দিলো নিজ দক্ষতায়। কিন্তু এভাবে কতদিন? তাই তো আবেদন এলো দেশ চালিয়ে নিতে আমাদের কাজে ফিরতে হবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।তাই স্বল্প পরিসরে চলছে সবকিছু। কিন্তু সংক্রমণ চলমান, মৃত্যু দেখছি প্রতিদিন। এ অবস্থায় লক ডাউন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই দরকার, আবার অন্যান্য কার্যক্রমও দরকার।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ভিশন ২০২১ অনেক আগেই ঘোষণা করেছেন।সেই লক্ষ্যে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বিটিআরসির কর্মকাণ্ডের ফলাফল হিসেবে নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটিতে আজ বাংলাদেশ ৪জি সুবিধা পাচ্ছে যা উন্নততর হচ্ছে প্রতিনিয়ত।এলাকাভিত্তিক তারতম্য হচ্ছে এটিও সত্য কিন্তু সেই সমস্যা নিরসনে কার্যক্রম অব্যাহত আছে।
বর্তমানে সংকটময় পরিস্থিতিতে অফিসের কার্যক্রম এবং শিক্ষা-কার্যক্রম সুচারুরূপে পরিচালনার জন্য প্রত্যেকের প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং দক্ষতা থাকা দরকার। যিনি জ্ঞান রাখেন তিনি কার্যক্রমে অংশ নিয়ে নিজেকে আরও অভিজ্ঞ করে তুলছেন। আমি আপনি যদি সেই কার্যক্রমে অংশ নিতে পারি তবে আমরাও সমান ফলাফল গ্রহণ করে সফল হতে পারি। প্রযুক্তিগত জ্ঞান লাভের আগ্রহ গড়ে তুলতে হবে। তথ্য জানা নাগরিকদের অধিকার।বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সবার জন্য। প্রত্যেকেই এর আওতাভুক্ত।নতুন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শপথ নিয়ে শেষ করছি, "প্রযুক্তির জ্ঞান রাখবো, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। "