প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ১৯:৫৭
কুমিল্লার দেবীদ্বারে এক হতদরিদ্র কিশোরীর রহস্যজনক মৃত্যু ঘিরে এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে শোক ও শোরগোল। সোমবার (২ জুন) বিকেলে উপজেলার গুনাইঘর ইউনিয়নের রনপাগলা গ্রামের একটি নির্জন পুকুরে অর্ধগলিত মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানায়, এক পাগলা কুকুরকে ধাওয়া করার সময় পুকুরের উত্তরপাড়ের জঙ্গলে প্রবেশ করে মনিরুল ইসলাম নামের যুবক মরদেহটি দেখতে পান।
পুকুরে ভাসমান কিশোরীর দেহটি বেদনাদায়ক অবস্থায় ছিল। হাঁটুর উপর থেকে কোমর পর্যন্ত দেহে কাটাছেঁড়া ও পচন দেখা যায়। স্থানীয়রা জানান, তার বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ১৮ বছর হবে এবং তার পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে হাজির হাজারো স্থানীয় বাসিন্দা মর্মাহত হয়ে পড়েন, কেউই তাকে চিনতে পারেননি।
পুকুরের ধারে উপস্থিত সামসুল হক মাস্টার বলেন, তিনি মসজিদ থেকে নামাজ শেষে ঘটনাস্থল দেখেন এবং জানান, ওই কিশোরী এলাকার কেউ নন। এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে কারণ এভাবে নির্জন স্থানে কেউ এমন নিষ্ঠুরতার শিকার হতে পারে, তা ভাবতেও কষ্ট হয়।
স্থানীয় আরও একজন নুরুল ইসলাম বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, অপরিচিত দুষ্কৃতিকারীরা তাকে হয়তো দূরের কোথাও থেকে নিয়ে এসে ধর্ষণ এবং হত্যা পূর্বক এই পুকুরে ফেলে দিয়েছে। তার দেহের অবস্থা দেখে এ কথা অনুমান করা হচ্ছে যে, দেহটি কয়েক দিন আগে এখানে ফেলা হয়েছে।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি সন্ত্রাসাত্মক হত্যাকাণ্ড। মরদেহের অবস্থা এতটাই নাজুক যে তাকে চেনা সম্ভব হচ্ছে না। ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য ময়নাতদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করা হচ্ছে।
স্থানীয়দের মধ্যে এই ঘটনাটি গভীর দুঃখ ও আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং দ্রুত দুষ্কৃতিকারীদের শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে। পরিস্থিতি এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা হয়নি, তাই এলাকাবাসীর নিরাপত্তা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
এই ঘটনায় কুমিল্লার সাধারণ মানুষ তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন এবং দুষ্কৃতিকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তারা আশা করছেন দ্রুত তদন্ত সম্পন্ন হয়ে অপরাধীরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পাবে।