প্রকাশ: ২ জুন ২০২৫, ২০:৪৭
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতীয় পোর্টাল দ্য ওয়ালের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পেছনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতা ও ষড়যন্ত্রের কথা উল্লেখ করে এক অদ্ভুত দাবি করেন। তার কথায়, গোয়েন্দারা সম্ভবত প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রকৃত পরিস্থিতি জানানোর পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থে কাজ করেছে। তিনি বলেন, গোয়েন্দারা মূলত সরকারকে সতর্ক করেনি, বরং ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে থাকতে পারে।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরো বলেন, জামায়াতে ইসলামীসহ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা এখনও সক্রিয় এবং তারা ক্ষমতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য অস্ত্র হাতে নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। তিনি সাবেক সরকারের পতনের জন্য জামায়াতকেও দায়ী করেন এবং তাদের "শেষ পর্যন্ত বসে থাকবে না" বলে সতর্ক করেন। এই বিবৃতি দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
জুলাই গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রেক্ষাপটে আসাদুজ্জামান খান তার ভূমিকা নিয়ে কোনো অনুশোচনা প্রকাশ করেননি। তিনি জানান, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী শুধুমাত্র আত্মরক্ষার জন্য কাজ করেছে এবং সম্পত্তি রক্ষায় পদক্ষেপ নিয়েছে। তার দাবি, অনেক নিহত পুলিশ সদস্য এবং আওয়ামী লীগ কর্মী ছিলেন, যা গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে যায়।
অপর দিকে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে মামলা চলছে। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামালসহ অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। কিন্তু এসব অভিযোগকে কামাল মিথ্যা ও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে ব্যাখ্যা করেন।
কামাল কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, তৎকালীন সরকার শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে সমঝোতা করতে ব্যর্থ হয়েছিল, যা পরবর্তীতে ব্যাপক আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। তিনি বলেন, ছাত্রদের সাথে আলোচনার দায়িত্ব যারা পেয়েছিলেন তারা যথাযথভাবে কাজ করেননি।
এই সাক্ষাৎকারে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিতর্কিত মন্তব্যগুলো দেশ ও দেশের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। তার বক্তব্য জাতীয় ঐক্যের অবস্থা ও ভবিষ্যত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অবশ্যই এ ধরনের বিবৃতি দেশের রাজনৈতিক সংলাপকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ এবং বিতর্কিত করবে। রাজনৈতিক ঐক্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় আগামী দিনে কী প্রভাব পড়ে তা সময়ই বলে দেবে।