ছায়াপথ মহাকর্ষীয় শক্তি দ্বারা আবদ্ধ একটি অতি বৃহৎ সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা, যা তারা, আন্তঃনাক্ষত্রিক গ্যাস ও ধূলিকণা, প্লাসমা এবং প্রচুর পরিমাণে অদৃশ্য বস্তু দ্বারা গঠিত। সম্প্রতি ‘লোফার’ রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে নতুন আরও প্রায় তিন লাখ ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন। এর মাধ্যমে কৃষ্ণগহ্বর এবং ছায়াপথ কিভাবে সৃষ্টি হয় সে সম্পর্কে অনেক কিছু জানা যাবে বলে আশা করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।
লাল আলোকচ্ছটা
‘হেটডেক্স’ এলাকার এই ‘মোন্টাজ’-এ অনেকগুলো ছায়াপথ দেখা যায়। ১৮টি দেশের ২শ’ জনেরও বেশি বিজ্ঞানী এই লাখো ছায়াপথ আবিষ্কার করেছেন, যা আগে অন্য কেউ কখনও দেখেননি। এর ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা রেডিও টেলিস্কোপ নেটওয়ার্ক ‘লো ফ্রিকোয়েন্সি অ্যারে’ বা ‘লোফার’ এর মাধ্যমে উত্তর আকাশে একটি নতুন মানচিত্র তৈরি করেছেন।
জ্যোতির্ময় পাখা
রেডিও উৎস ‘বিথ্রি জিরো ওয়ান ফাইভ সেভেন প্লাস ফোর জিরো সিক্স’ উৎসের চৌম্বকক্ষেত্র সম্পর্কে বিশাল আকারের আলোড়নের উপস্থিতি নির্দেশ করে। অনেকেই এটাকে পাখার আকৃতি হিসেবে দেখতে পান।
সর্পিল ছায়াপথ
এ উজ্জ্বল বর্ণিল লেজটি সর্পিল ছায়াপথ ‘এম ওয়ানজিরোসিক্স’-এর। গবেষকদের বিশ্বাস, অগ্নিশিখার মতো দেখতে এই কাঠামো ছায়াপথের কেন্দ্রীয় বিশাল আকারের কৃষ্ণগহ্বরের কর্মকাণ্ডের ফলাফল। হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্পদার্থবিদ মারকুস ব্রুগেন বলেছেন, ‘লোফারের মাধ্যমে আমরা জানার চেষ্টা করছি, ছায়াপথের যেখানে কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে, সেখানে এটা থাকার কারণ কী?’
‘ঘূর্ণাবর্ত ছায়াপথ’
এটি এমফিফটিওয়ান ‘ঘূর্ণাবর্ত ছায়াপথ’ নামে পরিচিত বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে দেড় থেকে সাড়ে তিন কোটি আলোকবর্ষ দূরত্বের মধ্যে। আর এর কেন্দ্রে রয়েছে বেশ বড় আকারের কৃষ্ণগহ্বর।
রক্তচক্ষু
‘সিআইজেডএ জেটুটুফোরটু পয়েন্ট এইট প্লাস ফাইভ থ্রি জিরো ওয়ান’ ছায়াপথ গুচ্ছের এ নাম দেয়া হয়েছে। গবেষকদের আশা, লোফারের নতুন তথ্য ছায়াপথ গুচ্ছ কিভাবে সৃষ্টি হয় সে সম্পর্কেও ধারণা পাওয়া যাবে।
মহাকাশে বিস্ফোরণ
এটি ছায়াপথ ‘আইসি থ্রিফোরটু’-এর সর্পিল বাহুতে সুপারনোভার বিস্ফোরণের ছবি। নতুন আবিষ্কৃত ছায়াপথগুলো সম্পর্কে জ্যোতির্বিজ্ঞানী সাইরিল টাসে জানিয়েছেন, ‘এর মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন দিক উন্মোচিত হলো।’
চমকপ্রদ তারকাপুঞ্জ
লোফারের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা অপূর্ব কিছু ছবির জন্য মাঝে মাঝে বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নেন।
এক কোটি ডিভিডি
ছায়াপথ গুচ্ছ ‘অ্যাবেল ওয়ানথ্রিওয়ানফোর’ পৃথিবী থেকে অন্তত ৪৬ কোটি আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। লোফারের গবেষকরা এটি-সহ অন্তত তিন লাখ নতুন ছায়াপথের অনেক তথ্য সংগ্রহ করছেন।
জার্মানির বিলেফেল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ডোমিনিক সোয়ার্ৎস জানিয়েছেন, ‘আমরা এত তথ্য পেয়েছি যা, অন্তত এক কোটি ডিভিডিতে ধারণ করা যাবে। সেগুলো নিয়ে কাজ শুরু করেছি।’
ইনিউজ ৭১/এম.আর
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।