প্রকাশ: ২০ মে ২০২৫, ১০:৫৪
যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা সফলভাবে চালু করেছেন বিশ্বের প্রথম কার্যকরী কোয়ান্টাম ইন্টারনেট পরীক্ষামূলক নেটওয়ার্ক, যার মাধ্যমে ভবিষ্যতে একেবারেই নিরাপদ ও সুপারফাস্ট ইন্টারনেট ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। "শিকাগো কোয়ান্টাম এক্সচেঞ্জ -এর উদ্যোগে পরিচালিত এই প্রকল্পে ব্যবহার করা হয়েছে কোয়ান্টাম এনট্যাংলমেন্ট পদ্ধতি, যার মাধ্যমে তথ্য স্থানান্তর সম্ভব হবে এমনভাবে, যেটি হ্যাক বা জালিয়াতি করা প্রায় অসম্ভব। প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, এই কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের সফল পরীক্ষা মূলত ভবিষ্যতের একটি সাইবার নিরাপদ যুগের বার্তা দিচ্ছে। বর্তমানে পরীক্ষাটি 124 কিলোমিটার দীর্ঘ ফাইবার অপটিক লাইনে সম্পন্ন হয়েছে, যা শিকাগো শহরের বিভিন্ন অংশকে সংযুক্ত করেছে।
এই প্রযুক্তি প্রচলিত ইন্টারনেটের তুলনায় শতগুণ বেশি দ্রুততা ও নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হবে বলে দাবি গবেষকদের। কোয়ান্টাম বিট বা কিউবিট ব্যবহার করে ডেটা আদান-প্রদান করা হবে, যা সাধারণ বিটের তুলনায় অনেক বেশি তথ্য বহন করতে পারে। ফলে, স্বাস্থ্যসেবা, ব্যাংকিং, প্রতিরক্ষা খাত এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক উন্নয়নেও এ প্রযুক্তি বিপ্লব আনবে।
গবেষণা দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, এই নেটওয়ার্ক ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে এবং আন্তর্জাতিকভাবে যৌথভাবে ব্যবহারযোগ্য একটি কোয়ান্টাম ইন্টারনেট গঠনের পরিকল্পনাও রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের ওপর অনেক দেশই কাজ করছে, কিন্তু একইসাথে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক গঠনের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন, যাতে নিরাপদ ও দ্রুতগতির তথ্য আদান-প্রদানের নতুন একটি পৃথিবী তৈরি হয়।
এটি একদিকে যেমন ডেটা নিরাপত্তায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে, অন্যদিকে জাতীয় পর্যায়ে সাইবার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে করবে আরও সুনির্মাণ ও দুর্ভেদ্য। ফলে, কোয়ান্টাম ইন্টারনেটকে ভবিষ্যতের ‘ইন্টারনেট ২.০’ বলা হচ্ছে।
এই সফলতা শুধু প্রযুক্তির অগ্রগতিই নয়, বরং একটি নতুন তথ্য-যুগের সূচনার প্রাথমিক ধাপ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। শিগগিরই এর উন্নত সংস্করণ ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু উন্নত গবেষণা কেন্দ্রে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হতে যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যেই এই প্রযুক্তি সাধারণ ব্যবহারকারীদের নাগালে আসবে এবং বর্তমানে যেভাবে আমরা ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তার পুরো রূপান্তর ঘটবে।