বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল দায়িত্ব। শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে জিয়া উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তিনি এসব কথা বলেন। ড. মঈন খান দাবি করেন, বিগত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর ফ্যাসিস্ট শাসন চালিয়েছে। গুম-খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে লক্ষাধিক মিথ্যা মামলায় ৫০ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। ফলে এখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছ থেকে মানুষের প্রত্যাশা হলো সুষ্ঠু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন বা মেয়র নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটানোই মূল লক্ষ্য। বর্তমান সরকার ডকট্রিন অব নেসেসিটির ভিত্তিতে ক্ষমতায় এসেছে। তবে আমরা একটি নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটের প্রতিফলন দেখতে চাই। তিনি উল্লেখ করেন, গণতন্ত্র মানে জনগণের ইচ্ছার সঠিক প্রতিফলন, আর সেই অধিকার ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি।
বিগত দিনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ড. মঈন খান জানান, সেই সময় জনগণ তাদের মতামত সুষ্ঠুভাবে প্রকাশ করতে পেরেছিল। তিনি মনে করেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং এটি চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনা করবে। আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে ব্যালট চুরি ও দিনের ভোট রাতে করার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, দেশের মানুষ এসব কখনো মেনে নেয়নি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বিএনপি জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠনের পক্ষপাতী। জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকারই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে। এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, বিগত ৫৩ বছরের চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এসে দেশের জনগণ দেখেছে কীভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যারা সঠিকভাবে নির্বাচিত হবেন, তারাই দেশের উন্নয়ন এবং সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবেন। জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করাই গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি বলে মনে করেন তিনি।
ড. মঈন খান বলেন, যে কেউ তার নিজস্ব মতাদর্শে দল গঠন করতে পারে, এখানে কোনো বাধা নেই। তবে শাসকদলের নির্যাতন এবং ভোট কারচুপির মতো অপকর্ম কখনো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। বিএনপি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।
সবশেষে তিনি বলেন, দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার এই লড়াইয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।