নির্মানের পর দীর্ঘ ১৫ বছর পড়ে থাকার পর ঝিনাইদহ ওরাল স্যালাইন ফ্যাক্টরি আর চালু হচ্ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের তৎপরতা না থাকায় এই প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রনালয়।
এদিকে এর আগে ট্রমা হাসপাতালেরও বরাদ্দ বাতিল হয়েছে। এ নিয়ে জেলাবাসির মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকে বলছেন, মানুষ চেয়ে পায়না, আর দুই দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠান সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মশিউর রহমান প্রতিষ্ঠিত করলেও তদ্বীরের অভাবে তা বাতিল হয়ে গেলো।
এদিকে স্যালাইন ফ্যাক্টরির ভবনটির কি গতি হবে তাও বলতে পারে না সিভিল সার্জন দফতর। অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে থাকতে এখন কোভিড টিকাদান কেন্দ্র করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সুত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে একটি প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহ শহরের মদনমোহন পাড়ার পুরানো হাসপাতালের পাশে ওরাল স্যালাইন ফ্যাক্টরি নির্মাান কাজা শুরু হয়। কাজ শেষ হয় ২০০৭ সালে।
এরপর স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর কর হয়। কথা ছিল এ ফ্যাক্টরিতে স্যালাইন তৈরি হবে। এ স্যলাইন আশেপাশের জেলার সরকারি হাসপাতাল গুলোতে সরবরাহ করা হবে। ব্যবহৃত হবে রোগিদের চিকিৎসায়। বিশেষ করে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগিদের চিকিৎসায় এই ফ্যাক্টরি ভুমিকা রাখতো।
কিন্তু দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও কোন লোকবল নিয়োগ হয়নি। সরবরাহ করা হয়নি স্যালাইন তৈরির যন্ত্রপাতি। ফলে কাজে আসছে না। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার জাহিদ হোসেন জানান, স্যালাইন ফ্যাক্টরি নির্মানে ৯২ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছিল। কিন্তু নির্মানের পর থেকে ভবনটি পড়ে আছে।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে যারা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তারা একটু তৎপর হলেই প্রতিষ্টানটি চালু করা সম্ভব হতো। এ বিষয়ে জেলার মানবাধিকার কর্মী অধ্যক্ষ আমিনুর রহমান টুকু বলেন, অনেক টাকা ব্যয়ে এ স্যালাইন ফ্যাক্টরিটি নির্মান করা হয়। এটি দীর্ঘদিন যাবত পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে নির্মানের উদ্দেশ্য। তিনি এই প্রকল্পটি বাতিল না করে চালুর দাবি করেন।
জেলার সিভিল সার্জন ডাঃ শুভ্রা রানী দেবনাথ বলেন, অনেক আগে স্যালাইন ফ্যাক্টরিটি নির্মার করা হয়। লোকবল ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ না করায় চালু হয়নি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা জানান, যশোরে একটি স্যালাইন ফ্যাক্টরি আছে। সে কারনে পাশের জেলা ঝিনাইদহে আরেকটি ওরাল স্যালাইন ফ্যাক্টরি চালুর যৌতিকতা আছে বলে মনে করছেন না কর্তৃপক্ষ। আর ভবনটি অন্য ভাবে ব্যবহারের কথা চিন্তা করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
এদিকে ঝিনাইদহ দুর্ঘটনা প্রবন এলাকা হওয়ায় সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম মশিউর রহমান জেলায় একটি ট্রমা সেন্টারের বরাদ্দ নিয়ে আসেন। কিন্তু জমি অধিগ্রহনে জটিলতা থাকায় সেটিও বাতিল হয়েছে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি হওয়ার সুবাদে বিএনপির সাবেক এমপি সদ্য প্রয়াত মশিউর রহমান ঝিনাইদহ শহরে শিশু হাসপাতাল, ডয়াবেটিক হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল, খাবার স্যৗালাইন ফ্যাক্টরি, ট্রমা হাসপাতাল, হরিণাকুন্ডুতে বিএসসি নার্সিং ট্রেনিং কেন্দ্র, করোনারী কেয়ার ইউনিট, নার্সিং ইন্সটিটিউট, ম্যাটস, ইন্সটিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, মুক ও বধির স্কুল, পলিটেকটিক ইন্সটিটিউট, বিআরটিএ ট্রেনিং সেন্টার, সরকারী ভেটেরিনারি কলেজ, কৃষি ইন্সটিটিউট, কারিগরি প্রশিক্ষন কেন্দ্রসহ অসংখ্য সরকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে নজীর সৃষ্টি করেন।
কিন্তু পরবর্তীতে তিনি আর সংসদ সদস্য হতে না হওয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানে জনবল সংকট ও যন্ত্রপাতির অভিাবে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। এর মধ্যে জেলাবাসির জন্য অতি গুরুত্বপুর্ন খাবার স্যৗালাইন ফ্যাক্টরি ও ট্রমা হাসপাতাল স্থাপন প্রকল্প বাতিল হয়ে গেছে।
আপনার মতামত লিখুন :
বি: দ্র: প্রিয় পাঠক সমালোচনা আপনার অধিকার । তবে ভাষাটাও মার্জিত হতে হবে। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ ।