দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: মেঝেতে পড়ে আছে নিম্নমানের ওষুধ !

হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রতিদিন হাজারেরও বেশি রোগী সেবা নিতে আসেন এ ৫০ শয্যার হাসপাতালে, যা রোগীর চাপের দিক থেকে জেলার তৃতীয় বৃহত্তম। এরমধ্যে অধিকাংশই দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ, যারা ৫ টাকার টিকিটে চিকিৎসাসেবা নিতে এসে ওষুধ না পেয়ে বঞ্চিত হচ্ছেন।

জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে হাসপাতালের জন্য বরাদ্দ ৯৬ লক্ষ টাকা থেকে ছয়টি গ্রুপে ওষুধ ও সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য ই-জিপিতে দরপত্র আহ্বান করা হয়। সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. আলী এহসান তার আস্থাভাজন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড সার্জিক্যালকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাজ পাইয়ে দেন। একই দিনে দরপত্র মূল্যায়ন, এগ্রিমেন্ট, ওয়ার্ক অর্ডার ইত্যাদি সম্পন্ন করা হয়—যা বাস্তবে অসম্ভব।

ইজিপি শর্ত অনুযায়ী সরবরাহযোগ্য আইটেমের স্যাম্পল সংরক্ষণের নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। সরবরাহের ১৪ দিনের সময়সীমাও অমান্য করা হয়। সরবরাহকৃত ওষুধগুলো ছিল নিম্নমানের, মেয়াদোত্তীর্ণ ও অপ্রয়োজনীয়, ফলে মূল্যায়ন কমিটি তা গ্রহণ করেনি। বর্তমানে এসব ওষুধ হাসপাতালের বহির্বিভাগে মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। মালামাল সরিয়ে নিতে ঠিকাদারকে বারবার বলা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

হাসপাতালের বর্তমান ইউএইচএফপিও ডা. মো. মহিবুস ছালাম খাঁন বিষয়টি নিয়ে ২৩ ফেব্রুয়ারি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। তিনি জানান, নতুন করে দরপত্র আহ্বান না হওয়া পর্যন্ত ইউডিসিএল থেকেও ওষুধ সরবরাহ সম্ভব নয়। অতীত অনিয়মের দায়ে এখন জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত এবং প্রশাসনও বিব্রত।

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. বশির আহমেদ জানান, বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে এবং সিপিইউটির সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত বরাদ্দের টাকা ঝুঁকির মুখে রয়েছে। সাময়িকভাবে প্রাইভেট হাসপাতাল থেকে ২ হাজার এন্টিবায়োটিক ট্যাবলেট সরবরাহ করা হয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য নতুন দরপত্র প্রক্রিয়া শীঘ্রই শুরু করতে হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ সংকট ও অনিয়মের এই জটিলতায় দুর্নীতির ছোবলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।